পেঁয়াজের পাইকারি দাম কম খুচরায় বেশি

পেঁয়াজের পাইকারি দাম কম খুচরায় বেশি

পেঁয়াজের দাম স্বাভাবিক করতে অনেক অভিযান চালানোর পরেও পাইকারিতে কিছুটা দাম কমলেও খুচরায় তেমন পরিবর্তন আসেনি।  রাজধানীর আড়তে প্রতি বস্তা পেঁয়াজের দাম ছয়শ’ থেকে আটশ’ টাকা কমে এসেছে।

গত ২৯ সেপ্টেম্বর ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের ঘোষণা দেওয়ার পর বাংলাদেশে এই নিত্যপণ্যের দাম দ্বিগুণের বেশি বেড়ে যায়; যদিও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলে আসছিল,দেশে পেঁয়াজের মজুদ যথেষ্ট ,ফলে দাম বৃদ্ধির কোনো কারণ নেই। এরপরও দাম চড়তে থাকায় মিশর,তুরস্ক ও মিয়ানমার থেকে পেঁয়াজ আমদানির পাশাপাশি পাইকারি বাজারগুলোতে অভিযানে যান বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।

মন্ত্রণালয় জানায়, মঙ্গলবার ১০ জন ঊর্ধতন কর্মকর্তার নেতৃত্বে সারা দেশে চলে তদারকি অভিযান।কক্সবাজার,চট্টগ্রাম,ফরিদপুর,রাজবাড়ি,যশোর,দিনাজপুর,পাবনা,সাতক্ষীরা,সিরাজগঞ্জ ও শরীয়তপুর জেলার বাজারগুলোতে তদারকি হয়। জেলা প্রশাসন থেকেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

এদিন চট্টগ্রামে খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে তদারকি অভিযান চালায় জেলা প্রশাসন। সেখানে অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির প্রমাণ পেয়ে কয়েকজন পাইকারি বিক্রেতাকে জরিমানা ও সতর্ক করা হয়। তারা ভবিষ্যতে ন্যায্য মূল্যে পেঁয়াজ বিক্রির বিষয়ে প্রশাসনের কাছে অঙ্গীকার করেন। খাতুনগঞ্জে মিয়ানমার থেকে আসা প্রতিকেজি ৪২ টাকা দরের পেঁয়াজ ৭৫ টাকা থেকে ৮৯ টাকায় বিক্রির প্রমাণ পায় ভ্রাম্যমাণ আদালত।

ঢাকার মিরপুর-১ নম্বর সেকশনের বাজারেও প্রশাসনের কর্মকর্তারা অভিযানে যান বলে ওই বাজারের শাহ আলী বোগদাদিয়া বাণিজ্যালয়ের পরিচালক মোস্তফা কামাল জানিয়েছেন। তিনি বলেন, তারা ব্যবসায়ীদের সতর্ক করে গেছেন। আগামী বৃহস্পতিবার আবারও এসে বেচাকেনার হিসাব দেখবেন বলে জানিয়ে গেছেন। পাইকারিতে পেঁয়াজের দাম অনেকটাই কমে এসেছে বলে জানান ব্যবসায়ী মোস্তফা কামাল।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, গত ২৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ভারত থেকে আসা যেসব পেঁয়াজ ভোমরা, হিলি ও বেনাপোল স্থলবন্দরে প্রবেশ করেছে তা দ্রুত খালাস করতে বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে সরকার। এছাড়া টেকনাফ স্থলবন্দর হয়ে প্রতিদিন মিয়ানমার থেকে প্রায় ২০০ টন পেঁয়াজ আসছে। এলসির মাধ্যমে মিশর ও তুরস্ক থেকে আসা পেঁয়াজও চট্টগ্রাম বন্দরে খালাস শুরু হয়েছে বলে জানান তিনি।

মিয়ানমার থেকে আসা পেঁয়াজের আমদানি মূল্য ৪২ টাকা থেকে ৫৫ টাকার মধ্যে থাকছে। তবে হঠাৎ রপ্তানি চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় এই বাজারেও পেঁয়াজের দাম ঊর্ধমুখী বলে আমদানিকারকরা জানিয়েছেন। এদিকে বাজার স্থিতিশীল রাখতে এবং নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য সুলভ মূল্যে পেঁয়াজ সরবরাহ করতে ট্রাক সেলের পরিমাণ বাড়িয়েছে সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবি।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়,ঢাকায় টিসিবির ট্রাক সেল ১৬টি থেকে বাড়িয়ে ৩৫টিতে উন্নীত করা হয়েছে। সেখানে প্রতি কেজি ৪৫ টাকা দরে পেঁয়াজ বিক্রি করা হচ্ছে। সরকারি হিসাব মতে, দেশে বছরে মোট পেঁয়াজের চাহিদা প্রায় ২৪ লাখ টন। গত ২০১৮-২০১৯ অর্থ বছরে দেশে পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে ২৩ লাখ ৩০ হাজার টন। তবে অসময়ে বৃষ্টির কারণে অন্তত ৩০ শতাংশ পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে যাওয়ায় বেড়ে গেছে আমদানি নির্ভরতা। পেঁয়াজের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে বছরে আমদানি হয়ে থাকে ৮ থেকে ১০ লাখ টন।

#এসএস/বিবি/০২-১০-২০১৯

ক্যাটেগরী: ব্যবসা

ট্যাগ: ব্যবসা

বাণিজ্য ডেস্ক, বিবি বুধ, অক্টোবর ২, ২০১৯ ৫:৩৫ পূর্বাহ্ন

Comments (Total 0)