বাজারে বাহারি খেজুর...
খেজুর সারা বিশ্বে পরিচিত একটি ফল। তবে আমাদের দেশে সাধারণত রমজানেই সবচেয়ে বেশি খেজুর খাওয়া হয়ে থাকে। ইফতারি হিসেবে সবাই এটি পছন্দ করে। তাই এসময় বাজারে অনেক ধরনের খেজুর পাওয়া যায়। যেমন আজওয়া, আমবার, বরণী, সুগায়ি, মরিয়ম, শাকাবী, জাবী ইত্যাদি। এসব খেজুরের স্বাদ, আকৃতি ও বর্ণে রয়েছে ভিন্নতা।
চলুন জেনে নেয়া যাক, আমাদের দেশের বাজারে রমজানে কি কি খেজুর বেশি দেখা যায়:
আজওয়া খেজুর:
খেজুরের মধ্যে সবচেয়ে দামী ও সর্বোত্তম খেজুর হলো আজওয়া খেজুর। মদিনায় এ খেজুরের ফলন হয় বেশি। আজওয়া খেজুর কালো ও মাঝারি আকৃতির হয়ে থাকে। পুষ্টি ও মানের দিক দিয়ে সবচেয়ে ভালো খেজুরগুলোর মধ্যে আজওয়া রয়েছে প্রথম সারিতে। এদিকে ভালোমানের ১ কেজি আজওয়া খেজুরের দাম ২০০০ টাকা থেকে ২৫০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।
আমবার খেজুর:
আকারের দিক থেকে সবচেয়ে বড় যে খেজুরটি পাওয়া যায় তার নাম হল ‘আম্বর’। মদীনা ও আরব অধিবাসীদের নিকট এই খেজুরটি ‘আনবারা’ নামেই বেশী পরিচিত। অভিনব স্বাদ, তুলতুলে নরম গঠন, চৌকো (চারকোনা) মতন সাইজ এবং গাঢ় লাল রঙের জন্য এটি নি:সন্দেহে জাযিরাতুল আরবের অন্যতম শ্রেষ্ঠ একটি ফল।
স্বাস্থ্যগত দিক থেকেও এটি উপকারী। এই খেজুরের আরেকটি বিশেষত্ব হচ্ছে, এর উৎপত্তিস্থল শুধুমাত্র মদীনা মুনাওয়ারাহ। মদীনা থেকেই সারা দুনিয়াতে বাজারজাত করা হয়। শুধু মদীনায় জন্মানোর কারণে এই খেজুর গাছ এবং খেজুর অনেক কম পরিমাণে পাওয়া যায়।
সুগায়ি খেজুর: এই খেজুর গুলোর বেশ জনপ্রিয়তা রয়েছে দেশে ও মধ্য প্রাচ্যের দেশগুলোতে। সুগাই খেজুর দুই টোন রঙ এবং টেক্সচারের জন্য বিখ্যাত। এই খেজুর মূলত শুকনো টাইপের খেজুর। এর গোড়ার দিকে সোনালি এবং কিছুটা শুকনো থাকে, তবে তাদের দেহের বাকী অংশ বাদামী এবং নরম। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এগুলি কেবল সুস্বাদু।
এই খেজুরে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন, খনিজ, ক্যালসিয়াম ও পটাশিয়া। খেজুরে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরে রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়ায়। ফাইবারও মিলবে খেজুরে। তাই এই ফল ডায়েটে রাখতে পারেন নিশ্চিন্তে। প্রতিটি খেজুরে রয়েছে ২০ থেকে ২৫ মিলিগ্রাম ম্যাগনেসিয়াম, যা উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।রক্তস্বল্পতায় ভোগা রোগীরা প্রতিদিন খেজুর খেতে পারেন। একজন সুস্থ মানুষের শরীরে যতটুকু আয়রন প্রয়োজন, তার প্রায় ১১ ভাগ পূরণ করে খেজুর।
মরিয়ম খেজুর:
মরিয়ম খেজুরে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন রয়েছে। বিশেষ করে ভিটামিন বি১, বি২, বি৩, বি৫ এবং বি৬। এছাড়াও ভিটামিন এ এবং ভিটামিন সি এর চাহিদা পূরণের সহজ একটি মাধ্যম হচ্ছে মরিয়ম খেজুর। এর ফলে দৃষ্টিশক্তি যেমন ভালো থাকে তেমনি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
পুষ্টির দিক থেকেও খেজুরে রয়েছে সবধরনের প্রয়োজনীয় খাদ্যোপাদান। পুষ্টিবিদদের মতে, খেজুরে রয়েছে প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, ক্যালরি, সোডিয়াম, আয়রণসহ আরো অনেক খাদ্যোপাদান। তাই সারাদিন রোজা পালনের পর মুসুল্লিদের ইফতারে থাকে এই সুস্বাদু ফলটি। এছাড়া খেজুরে রয়েছে রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা।
এদিকে ফল বিক্রেতাদের মতে, বাংলাদেশে সারা বছর খেজুরের চাহিদা থাকলেও রমজান মাসে এই চাহিদা বহুগুণ বেড়ে যায়। তাই বছরের এই সময় মানুষের চাহিদা অনুযায়ী বিপুল পরিমাণ খেজুর আমদানি করেন ফল বিক্রেতারা। বিক্রেতাদের মতে, বাজারে বর্তমানে একশরও বেশি ধরনের খেজুর পাওয়া যায়।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো তথা মরুভূমিতে খেজুরের ফলন বেশি হয়ে থাকে। বিশেষ করে সৌদি আরব ও ইরাকের খেজুর বিশ্ববিখ্যাত।
#তমহ/বিবি/০৯ ০৪ ২০২২
Share with others:
Recent Posts
Recently published articles!
-
শেয়ারবাজার ডেস্ক, বিবি
-
ব্যবসা ডেস্ক, বিবি
-
শেয়ারবাজার ডেস্ক, বিবি
-
ভূমি ডেস্ক, বিবি
-
প্রবাস ডেস্ক, বিবি