বিকাশ সিটি ব্যাংকের ‘পে লেটার’

বিকাশ সিটি ব্যাংকের ‘পে লেটার’

জরুরি প্রয়োজনে কেনাকাটাকে আরও সহজ করে দিতে প্রথমবারের মতো ডিজিটাল ক্ষুদ্র ঋণের আওতায় ‘পে লেটার’ নামের বিশেষ জামানতবিহীন ক্ষুদ্র ঋণ সেবা যৌথভাবে চালু করল সিটি ব্যাংক ও বিকাশ। অ্যাকাউন্টে টাকা না থাকলেও গ্রাহক এখন প্রয়োজনীয় পণ্য কিনে বিকাশ অ্যাপ থেকেই সিটি ব্যাংকের এই বিশেষ ঋণ নিয়ে সরাসরি মূল্য পরিশোধ করতে পারবেন। সাত দিনের মধ্যে এই অর্থ পরিশোধ করলে গ্রাহককে কোনো ইন্টারেস্ট দিতে হবে না।
১ এপ্রিল সোমবার সিটি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে এই বিশেষ ডিজিটাল ক্ষুদ্র ঋণ ‘পে লেটার’ এর সেবা কার্যক্রম উদ্বোধন করেন সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মাসরুর আরেফিন এবং বিকাশ এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কামাল কাদীর। এসময় উভয় প্রতিষ্ঠানের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দও উপস্থিত ছিলেন।
নতুন এই সেবায়, প্রাপ্তির যোগ্যতা সাপেক্ষে গ্রাহকরা ৫০০ থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত একটি সমন্বিত ঋণ সীমা পাবেন যেখান থেকে তারা তাৎক্ষণিকভাবে পে লেটার এবং ডিজিটাল ক্ষুদ্র ঋণ উভয় সেবাই গ্রহণ করতে পারবেন। আর্থিক অন্তর্ভুক্তিকে ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জরুরি এবং নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য কেনার ক্ষমতা বাড়ানোর উদ্দেশ্যে এই পে লেটার সেবা চালু করা হয়েছে। সারাদেশে ৬ লাখের বেশি মার্চেন্ট পয়েন্ট থেকে বিকাশ অ্যাপ দিয়ে কেনাকাটা করে পে লেটার সেবা ব্যবহারের সুযোগ পাবেন গ্রাহকরা।
এই ঋণের জন্য বিবেচ্য গ্রাহক তার প্রয়োজনীয় পণ্য বা সেবা নিয়ে মার্চেন্ট এর কিউআর কোড স্ক্যান করার পর অথবা সরাসরি মার্চেন্ট নম্বর বসিয়ে, টাকার পরিমাণ বসাবেন এবং পে লেটার নির্বাচন করবেন। পরবর্তী স্ক্রিনে তাকে সাত দিনে ইন্টারেস্টবিহীন পরিশোধ অথবা ৩ থেকে ৬ মাসে পরিশোধের যেকোন একটি পদ্ধতি নির্বাচন করতে হবে।
সাত দিনে ইন্টারেস্টবিহীন পরিশোধ পদ্ধতিতে গ্রাহক যদি সপ্তম দিনের মধ্যে সম্পূর্ণ অর্থ পরিশোধ না করতে পারেন, তাহলে পে লেটার টি ৩ মাসের ক্ষুদ্র ঋণে পরিণত হয়ে যাবে এবং বার্ষিক ৯ শতাংশ ইন্টারেস্ট প্রযোজ্য হবে।

এদিকে, ৬ মাসে পরিশোধ পদ্ধতিতে গ্রাহককে ২০ শতাংশ ডাউনপেমেন্ট শুরুতেই দিতে হবে এবং বাকি ৮০ শতাংশ পে লেটারের মাধ্যমে সমান কিস্তিতে ভাগ হয়ে প্রতি মাসের নির্দিষ্ট তারিখে স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরিশোধ হয়ে যাবে। এক্ষেত্রেও বার্ষিক ৯ শতাংশ ইন্টারেস্ট প্রযোজ্য হবে। উভয় ক্ষেত্রেই ০ দশমিক ৫৭৫ শতাংশ ভ্যাটসহ প্রসেসিং ফি যুক্ত থাকবে।

সিটি ব্যাংক ও বিকাশ এর হাত ধরেই প্রথম ডিজিটাল ক্ষুদ্র ঋণের যুগে প্রবেশ করেছে বাংলাদেশ। ২০২১ সালে চালু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ৮ লক্ষ বার ডিজিটাল ক্ষুদ্র ঋণ নিয়েছেন আড়াই লাখের অধিক গ্রাহক, টাকার অংকে যার পরিমাণ প্রায় ৭৫০ কোটি।

গ্রাহকের বিকাশ লেনদেন এবং সিটি ব্যাংকের ক্রেডিট রিস্ক ম্যানেজমেন্ট পলিসির উপর ভিত্তি করে ঋণ পাওয়ার উপযুক্ততা এবং ঋণের পরিমাণ নির্ধারিত হয়। এই সেবার আওতাভুক্ত হতে গ্রাহককে অবশ্যই ই কেওয়াইসি এর মাধ্যমে নিবন্ধিত হতে হবে। গ্রাহক বিকাশ অ্যাপ থেকেই তথ্য হালনাগাদের মাধ্যমে ই কেওয়াইসি গ্রাহক হিসেবে নিবন্ধন হালনাগাদ করে নিতে পারবেন।

একজন ঋণগ্রহীতা মেয়াদ পূর্তির আগেও ঋণ পরিশোধ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে তাকে শুধুমাত্র সেই কয়েকদিনের জন্যই ইন্টারেস্ট বহন করতে হবে। অগ্রীম নিষ্পত্তির জন্যও কোনো বাড়তি খরচ হবে না। ঋণগ্রহীতাকে নোটিফিকেশন এর মাধ্যমে ঋণ পরিশোধের বিষয়টি মনে করিয়ে দেওয়া হবে।

অনুষ্ঠানে সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মাসরুর আরেফিন বলেন, ডিজিটাল ক্ষুদ্রঋণের সবচেয়ে ভালো বৈশিষ্ট্য এই যে গতানুগতিক পদ্ধতিতে ঋণ দিয়ে যে সংখ্যক গ্রাহককে ঋণ প্রদান সম্ভব তারচেয়ে কয়েক গুণ গ্রাহককে এই সুবিধার আওতায় আনা সম্ভব হয়। তারচেয়েও বড় কথা, যে সকল জায়গায় আমাদের শাখা বা এজেন্ট পয়েন্ট নেই সে সকল গ্রামীণ এলাকার প্রান্তিক গ্রাহকদের কাছেও আমরা আমাদের ব্যাংকিং সুবিধা প্রদান করতে পারছি।

এ প্রসঙ্গে বিকাশ এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কামাল কাদীর বলেন, ব্যাংকিং সেবার বাইরে থাকা মানুষের জন্য ব্যাংকের ঋণ সহজলভ্য করেছে বিকাশ। এই জনগোষ্ঠীর নানান রকম জরুরি কেনাকাটার প্রয়োজনকে বিবেচনায় রেখে এই যৌথ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যা ক্যাশবিহীন লেনদেনের ইকোসিস্টেম তৈরিতে কার্যকরী ভূমিকা রাখবে।

#তমহ/বিবি/০২ ০৪ ২০২৪


প্রযুক্তি ডেস্ক, বিবি
Published at: সোম, এপ্রিল ১, ২০২৪ ১১:৩৫ অপরাহ্ন
Share with others:
ad

Recent Posts

Recently published articles!