ডিজিটাল আরকাইভিংয়ের তাগিদ

ডিজিটাল আরকাইভিংয়ের তাগিদ

গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র সংরক্ষণে এখনো কাগজের ব্যবহার হয়ে থাকে। আর বেশি বেশি কাগজের ব্যবহার মানে গাছ কমে যাওয়া। কাগজ নির্ভর আরকাইভসের জন্য জায়গাও অনেক বেশি দরকার হয়। তাই নথিপত্র সংরক্ষণে ডিজিটাল আরকাইভিংয়ে আরো জোর দিতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির যাকে বলছেন, ‘পেপারলেস ডিজিটাল সলিউশন।’

দেশের ব্যাংকিংখাত তদারকির সর্বোচ্চ সংস্থার প্রধান এই ব্যক্তিত্ব আজ ১৬ নভেম্বর শনিবার দুপুরে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ আরকাইভস অ্যান্ড রেকর্ডস ম্যানেজমেন্ট সোসাইটির (বারমস) দ্বিবার্ষিক সাধারণ সভায়। ‘বাংলাদেশে ব্যাংকিং সেক্টরে রেকর্ডস ম্যানেজমেন্ট: বর্তমান অবস্থা ও ভবিষ্যৎ ভাবনা’ শীর্ষক আলোচনা ছিলো একই আয়োজনে।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ফজলে কবির বলেন, দেশের ইতিহাস ঐতিহ্য, নথিপত্র সংরক্ষণে অনেকেই হতাশার কথা বলে থাকেন। কিন্তু ব্যাংকিংখাতে আরকাইভিংয়ের বিষয়টি গুরুত্ব দেয়া হয়। ১৯৯০ সালের নথি বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট শাখার কর্মকর্তাদের কাছে চেয়ে তিনি দ্রুততম সময়ের মধ্যে পেয়েছেন। দরকারি রেকর্ডস বিভিন্ন ব্যাংকে চেয়েও ম্যানুয়ালি ও ডিজিটালি দুভাবেই দ্রুত পাওয়ার অভিজ্ঞতার কথা জানান তিনি।

ব্যাংকিংখাত শুধু নয়, সরকারি বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠানে আরকাইভস স্থাপন করতে হবে। এমনকি কোনো ব্যক্তিও যদি রাষ্ট্রীয়ভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে থাকেন, তবে তার জীবন ও কর্মের দরকারি সবকিছু সংরক্ষণ করতে হবে। নথিপত্র না থাকার কারণে জমিজমার ক্ষেত্রে অনেক সময় ব্যক্তি ক্ষতির মুখে পড়েন। আবার অনেক সময় ছোট্ট একটি পুরনো কাগজের কারণে আন্তর্জাতিক দেন দরবার বা মামলায় রাষ্ট্র জিতে যায়। এমন অনেক উদহারণ রয়েছে। বারমসের দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে বক্তারা এসব দিক তুলে ধরেন।

তাদের মতে, অর্থ লেনদেনের ক্ষেত্রে নথিপত্র সংরক্ষণ আরো গুরুত্বপূর্ণ। সব ক্ষেত্রেই নথিপত্র যথাযথ ব্যবস্থাপনার উপর জোর দিতে হবে। এক্ষেত্রে ডিজিটাল আরকাইভিংয়ের উদ্যোগ আরো গতিশীল করতে হবে বলে মনে করেন বক্তারা। এক্ষেত্রে ইতিবাচক দিক তুলে ধরে বারমসের সভাপতি অধ্যাপক ড. শরীফ উদ্দিন আহমেদ বলেন, আরকাইভিংয়ের ক্ষেত্রে ব্যাংকিংখাত এগিয়ে আসছে। তারা নানা উদ্যোগ নিচ্ছে। এটা অবশ্যই দারুণ খবর।

তিনি আরো বলেন, বাঙালি ইতিহাসবিমুখ জাতি। তাদের যে অতীত গৌরব রয়েছে, তার অনেক কিছুই আজ হারিয়ে গেছে। কিন্তু এখন প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বাংলাদেশের অভ্যুদয় ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পড়ানো বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এর মাধ্যমে সবাই ইতিহাসমুখী হচ্ছে। এটা অবশ্যই ভালো দিক। অনুষ্ঠানের সভাপতি শরীফ উদ্দিন আহমেদ এভাবেই সমাপনী বক্তব্য দেন। এ আয়োজনে স্বাগত বক্তব্য দেন বারমসের সাধারণ সম্পাদক জালাল আহমেদ।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আল আমিন বিন হাসিম। এর উপর আলোচনা করেন ডাটাফোর্টের পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী এম এইচ খসরু, গবেষক ও সাংবাদিক দেলওয়ার হাসান এবং এসইআইপির (স্কিল ফর এমপ্লয়মেন্ট ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রাম) নির্বাহী পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) জালাল আহমেদ।

বিশেষ অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) সভাপতি সৈয়দ মাহবুবুর রহমান, অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোহম্মদ শামস্ উল ইসলাম এবং আরকাইভস ও গ্রন্থাগার অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) ফরিদ আহমদ ভূঁইয়া।

টিএমএইচ/বিবি/১৬ ১১ ২০১৯


ব্যাংক ডেস্ক, বিবি
Published at: শুক্র, নভেম্বর ১৫, ২০১৯ ৭:২৫ অপরাহ্ন
Share with others:

Recent Posts

Recently published articles!