১৭৫ বিঘা জমিতে চাষাবাদে নিষেধাজ্ঞা!

১৭৫ বিঘা জমিতে চাষাবাদে নিষেধাজ্ঞা!

জমি নিয়ে সংঘর্ষে এক ইউপি সদস্যের ভাই নিহতের জেরে জমিতে চাষাবাদ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে নাটোরের সিংড়া উপজেলায়। প্রায় আট মাস আগে আলমগীর হোসেন নামে একজন নিহত হন । তিনি স্থানীয় ইউপি সদস্য কামাল হোসেনের ভাই।

এই ঘটনায় দায়ের করা মামলায় আসামি করা হয় আটজনকে। আসামিরা আদালত থেকে জামিন পেয়ে বেরিয়ে এলেও তাদের ফিরতে দেয়া হচ্ছে না বাড়িঘরে। এছাড়া স্থানীয় গ্রামপ্রধানদের নির্দেশের নামে প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়ে আট পরিবারের প্রায় ১৭৫ বিঘা জমির চাষাবাদ বন্ধ করে দেয়া হয়।

ডাহিয়া ইউনিয়নের ৫নং ইউপি সদস্য কামাল হোসেন বলছেন, গ্রামবাসীর সঙ্গে ওই পরিবারগুলোর আপস হচ্ছে না। তাই গ্রামপ্রধানদের নির্দেশ পেয়ে তারা নিজেরাই জমি চাষ বন্ধ রেখেছেন। এটা কি আইনে পড়ে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এটা আইনের কথা না। আইন কিন্তু আমার আপনার মতো লোক দ্বারাই সৃষ্টি হয়। এটা একটা সমাজ, এই সমাজকে মেইনটেইন করে চলতে হবে। সমাজের বাহিরে তো কেউ না। এখানে দশ ঘর মানুষ একদিকে আর সত্তর ঘর মানুষ একদিনে। তাই গ্রামপ্রধানদের নির্দেশই আইন।’

জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে সিংড়ার বাঁশবাড়িয়া গ্রামের ইউপি মেম্বার কামাল হোসেনের সঙ্গে মৃত তমিজ উদ্দিনের ছয় ছেলের জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। এরই জের ধরে চলতি বছরের ১৮ জানুয়ারি দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে কামাল হোসেনের বড়ভাই আলমগীর হোসেন নিহত হন।
এরপর তমিজ উদ্দিন ও রইচ উদ্দিনের পাঁচ ছেলের বাড়িঘরে লুটপাট করে তাদের গ্রামছাড়া করেন ইউপি মেম্বার ও তাদের সমর্থকরা। আলমগীর হত্যা মামলায় অভিযুক্ত তমিজ উদ্দিনের ছয় ছেলে জামিনে বেরিয়ে এলেও তাদের এলাকায় ঢুকতে দেননি ইউপি মেম্বারের সমর্থকরা।

স্থানীয় গ্রামপ্রধান মিজানুর রহমান বলেন, ‘হত্যার ঘটনায় নয় বরং কবরস্থানের একটি জমি নিয়ে বিরোধে ওই কৃষকদের জমিতে চাষাবাদ করতে দেয়া হচ্ছে না। আর এটা কারও একক সিদ্ধান্ত নয়। স্থানীয় সমাজপ্রধানরা বসে এই সিদ্ধান্ত দিয়েছেন।’

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক আনিছুর রহমান বলেন, ‘একটি হত্যাকা কে কেন্দ্র করেআট মাস ধরে পাঁচ পরিবার গ্রামছাড়া। আর মেম্বার কামাল হোসেনের নেতৃত্বে চালানো হয়েছে ওই বাড়ি ঘরে লুটপাট। গত দুই মৌসুম ধরে অনাবাদি রয়েছে প্রায় ১৭৫ বিঘা ধানি জমি। লুটে নেয়া হয়েছে ১৫টি শ্যালো মেশিন, মোটর ও পুকুরের মাছ।’

এবিষয়ে সিংড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘জমিজমা নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে একটা সংঘর্ষ হয় এবং সেখানে একজন নিহত হয়। এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা রয়েছে।’ তবে কৃষকরা জমিতে যেতে পারছে না বিষয়টি সম্পর্কে তিনি অবগত নন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুশান্ত কুমার মাহাতো বলেন, ‘আবেদনটি আমার নজরে আসেনি। কোনো জমি অনাবাদি থাকবে এটা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না।’ দ্রুত ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান তিনি।
#এসএস/বিবি/২৬ ০৯ ২০১৯


কৃষি ডেস্ক, বিবি
Published at: শুক্র, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০১৯ ১০:২৬ পূর্বাহ্ন
Category: কৃষি
Share with others:

Recent Posts

Recently published articles!