পঞ্চগড়ে গেলেই কাঞ্চনজঙ্ঘা দর্শন!
উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের আকাশ এবার মেঘমুক্ত থাকায় দেখা যাচ্ছে নয়নাভিরাম কাঞ্চনজঙ্ঘা। অক্টোবরের মাঝামাঝি থেকে নভেম্বর জুড়ে তেঁতুলিয়া মহানন্দার পাড় থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘার অপরূপ দৃশ্য দেখতে ভিড় করছেন পর্যটকরা।
সূর্যের আলোর সঙ্গে সঙ্গে রূপ বদলাতে থাকে কাঞ্চনজঙ্ঘা। কখনো শুভ্র, কখনো গোলাপি, আবার কখনো লাল রঙ নিয়ে হাজির হয় হিমালয় পর্বতমালার অন্যতম এ চূড়া। তবে শেষ বিকেলে সূর্যকিরণ যখন তির্যকভাবে বরফাচ্ছাদিত পাহাড়ে পড়ে তখন অনিন্দ্য সুন্দর হয়ে আবারও ধরা দেয় কাঞ্চনজঙ্ঘা।
তেঁতুলিয়ার ডাকবাংলো এলাকার মহানন্দা নদীর পাড় থেকে বেশ কাছাকাছি ধরা দেয় পর্যটকদের চোখে। এবারও এর মনোমুগ্ধকর সৌন্দর্য দেখতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসছেন দর্শনার্থীর।
উইকিপিডিয়ার তথ্যানুযায়ী, দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ার বাংলাবান্ধা ইউনিয়ন (স্থলবন্দর) থেকে নেপালের দূরত্ব ৬১ কিলোমিটার, ভুটানের দূরত্ব ৬৪ কিলোমিটার, চীনের দূরত্ব ২০০ কিলোমিটার, ভারতের দার্জিলিংয়ের দূরত্ব ৫৮ কিলোমিটার, শিলিগুড়ির দূরত্ব ৮ কিলোমিটার। অন্যদিকে হিমালয়ের এভারেস্ট শৃঙ্গের দূরত্ব ৭৫ কিলোমিটার আর কাঞ্চনজঙ্ঘার দূরত্ব ১১ কিলোমিটার।
কিন্তু মেঘ কুয়াশামুক্ত আকাশের উত্তর পশ্চিমে তাকালেই দেখা মেলে বরফ আচ্ছাদিত সাদা পাহাড়, মনে হয় এইতো চোখের সামনেই কাঞ্চনজঙ্ঘা! সূর্যোদয়ের আগে কিছুটা কালো দেখায় কাঞ্চনজঙ্ঘা। জানা গেছে, কাঞ্চনজঙ্ঘা পর্বতশৃঙ্গ নেপাল ও ভারতের সিকিম সীমান্তে অবস্থিত। হিমালয় পৃথিবীর সবোর্চ্চ পর্বতমালা।
এই পর্বতমালার তিনটি চূড়া আবার পৃথিবীর সবোর্চ্চ চূড়া। এরমধ্যে প্রথম অবস্থানে থাকা মাউন্ট এভারেস্টের উচ্চতা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৮ হাজার ৮৪৮ মিটার বা ২৯ হাজার ২৯ ফিট। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা চূড়া কেটু’র উচ্চতা ৮ হাজার ৬১১ মিটার বা ২৮ হাজার ২৫১ ফিট।
তৃতীয় অবস্থানে থাকা কাঞ্চনজঙ্ঘার উচ্চতা ৮ হাজার ৫৮৬ মিটার বা ২৮ হাজার ১৬৯ ফিট। যদিও ১৮৫২ সালের আগে কাঞ্চনজঙ্ঘাকে পৃথিবীর সৰ্বোচ্চ শৃঙ্গ বলে মনে করা হতো। ১৯৫৫ সালের ২৫ মে মাসে ব্রিটিশ পবর্তারোহী দলের সদস্য জোয়ে ব্রাউন এবং জর্জ ব্যান্ড সর্বপ্রথম কাঞ্চনজঙ্ঘায় আরোহণ করেন।
এদিকে সুউচ্চ এই চূড়া দেখতে প্রতি বছর অসংখ্য দেশি বিদেশি পর্যটক ছুটে যান ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং জেলা শহরের টাইগার হিল পয়েন্টে। টাইগার হিলই হচ্ছে কাঞ্চনজঙ্ঘার চূড়া দেখার সবচেয়ে আদর্শ জায়গা। তবে কেউ কেউ যান সান্দাকপু বা ফালুট।
আবার কেউ কেউ সরাসরি নেপালে গিয়েও কাঞ্চনজঙ্ঘা পর্যবেক্ষণ করে থাকেন। তবে যাদের এসব সুযোগ মেলে না সেইসব বাংলাদেশি পর্যটকেরা কাঞ্চনজঙ্ঘার রূপ অবলোকন করতে ছুটে যান তেঁতুলিয়ার বাংলাবান্ধায়।
সাদা তুষারে ঢাকা কাঞ্চনজঙ্ঘার সৌন্দর্য দেখার পাশাপাশি পঞ্চগড় আর তেঁতুলিয়ার শীতের আমেজও পর্যটকদের কাছে হয়ে ওঠে উপভোগ্য। তেঁতুলিয়া থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা ও মহানন্দা থেকে পাথর উত্তোলনের দৃশ্য ছাড়াও চা বাগানের সৌন্দর্য নজর কাড়ে পর্যটকদের।
#তমহ/বিবি/০১ ১২ ২০২১
Share with others:
Recent Posts
Recently published articles!
-
শেয়ারবাজার ডেস্ক, বিবি
-
ব্যবসা ডেস্ক, বিবি
-
শেয়ারবাজার ডেস্ক, বিবি
-
ভূমি ডেস্ক, বিবি
-
প্রবাস ডেস্ক, বিবি