মহান বিজয় দিবস উদ্‌যাপন

মহান বিজয় দিবস উদ্‌যাপন

আজ ১৬ ডিসেম্বর, মহান বিজয় দিবস। আজ বাঙালির গৌরবের দিন। পৃথিবীর মানচিত্রে স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের অস্তিত্ব প্রকাশের দিন আজ। ৪৮ বছর আগে এই দিনে বর্বর পাকিস্তানি বাহিনী হাতের অস্ত্র ফেলে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়েছিল বিজয়ী বাঙালির সামনে। সেদিন তারা স্বাক্ষর করেছিল পরাজয়ের সনদে। আর বীরের জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ ঘটেছিল বাঙালির।

মহান বিজয় দিবসের ভোরে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে বীর শহীদদের শ্রদ্ধা জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রাষ্ট্রীয়ভাবে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলীয় নেতাদের সঙ্গে নিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।

পরে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে ঢল নামে জনতার। শ্রদ্ধা ভালোবাসা নিয়ে শহীদদের উদ্দেশে পুষ্পাঞ্জলি নিবেদন করছে লাখো মানুষ।

এবারের বিজয় দিবস এসেছে ভিন্ন এক প্রেক্ষাপটে। ২০২০ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং এর পরের বছর ২০২১ সালে স্বাধীনতা অর্জনের সুবর্ণজয়ন্তী উদ্‌যাপন করবে বাংলাদেশ।

বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একাত্তরের ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে লাখো জনতার সামনে দেওয়া ঐতিহাসিক ভাষণে শত্রুদের মোকাবিলা করার জন্য যার কাছে যা আছে, তা ই নিয়ে সবাইকে প্রস্তুত থাকতে বলেন। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’

পাকিস্তানি ঔপনিবেশিক শাসন ও শোষণের বিরুদ্ধে দীর্ঘ ২৪ বছরের মুক্তির সংগ্রাম ও একাত্তর সালের নয় মাসের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের পথ বেয়ে এসেছে বাঙালির বিজয়। সাম্প্রদায়িক দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে সৃষ্ট পাকিস্তানে ১৯৪৭ সালেই বাঙালির ওপর প্রথম আঘাত এসেছিল। রাষ্ট্রভাষা উর্দু করার ঘোষণা দিয়েছিলেন পাকিস্তানি শাসকেরা। ১৯৫২ সালে বুকের তাজা রক্তে রাজপথ রাঙিয়ে বাংলার বীর সন্তানেরা মাতৃভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠা করে বিশ্বে এক অনন্য নজির সৃষ্টি করেছিলেন। ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে স্বাধিকারের চেতনার যে স্ফুরণ ঘটেছিল, কালক্রমে তা সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে রূপ নেয়।

স্বাধীনতার জন্য জীবন উৎসর্গ করা অকুতোভয় বীর সন্তানদের গভীর বেদনা ও পরম শ্রদ্ধায় স্মরণ করছে আজ কৃতজ্ঞ জাতি। শ্রদ্ধা জানাচ্ছে সম্ভ্রম হারানো মা বোনদের।

বিজয়ের ৪৮ বছর পূর্তিতে রাজধানীসহ দেশের বড় বড় শহরের প্রধান সড়ক ও সড়কদ্বীপ জাতীয় পতাকায় সাজানো হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ ভবন ও স্থাপনায় করা হয়েছে আলোকসজ্জা।

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী পৃথক বাণী দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি তাঁর বাণীতে বলেন, স্বাধীনতা বাঙালি জাতির শ্রেষ্ঠ অর্জন। এ অর্জনের পেছনে রয়েছে শোষণ বঞ্চনা এবং রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম ও আত্মত্যাগের ইতিহাস। লাখো শহীদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতার সুফল জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে সম্মিলিত প্রচেষ্টার বিকল্প নেই।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর প্রাক্কালে দেশ, গণতন্ত্র ও সরকারবিরোধী সব ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে হবে। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশের উন্নয়ন ও গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা রক্ষা এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য সবাইকে দায়িত্ব পালন করতে হবে।

#এসএস/বিবি/১৬ ১২ ২০১৯


জাতীয় ডেস্ক, বিবি
Published at: রবি, ডিসেম্বর ১৫, ২০১৯ ৯:৫৩ পূর্বাহ্ন
Share with others:

Recent Posts

Recently published articles!