নৌ শ্রমিকদের ১১ দফা

নৌ শ্রমিকদের ১১ দফা

সারাদেশে নৌযান শ্রমিকদের কর্মবিরতি শুরু হয়েছে। শ্রমিক ও কর্মচারীদের খোরাকি ভাতা ফ্রি ও ন্যূনতম মজুরি ২০ হাজার টাকা করাসহ ১১ দফা দাবিতে এ কর্মবিরতি । শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টার পর থেকে কর্মবিরতি শুরু হয়। এর ফলে যাত্রী ও পণ্যবাহীসহ সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে।

এ নিয়ে গত এক বছরে তিনবার ধর্মঘটের ডাক দিল ফেডারেশন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাদের এই কর্মসূচি চলবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের দপ্তর সম্পাদক প্রকাশ দত্ত।

নৌ শ্রমিকদের নেতারা বলছেন, নৌ মন্ত্রণালয় থেকে বারবার আশ্বাস দেওয়া হলেও দাবি বাস্তবে রূপ নিচ্ছে না। যেকারণে বাধ্য হয়ে তারা আবার ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন। দাবিগুলো চূড়ান্ত নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তারা ধর্মঘট প্রত্যাহার করবেন না।

শ্রমিক ফেডারেশনের ১১ দফা দাবিগুলো হলো ১. বাল্কহেডসহ সব নৌযান ও নৌপথে চাঁদাবাজি, ডাকাতি বন্ধ করা। ২. ২০১৬ সালে ঘোষিত গেজেট অনুযায়ী নৌযানের সর্বস্তরের শ্রমিকদের বেতন প্রদান। ৩. ভারতগামী শ্রমিকদের ল্যান্ডিং পাস এবং মালিক কর্তৃক খাদ্য ভাতা প্রদান। ৪. সব নৌযান শ্রমিকদের সমুদ্র ও রাত্রিকালীন ভাতা নির্ধারণ। ৫. এনড্রোস, ইনচার্জ, টেকনিক্যাল ভাতা পুনর্নির্ধারণ। ৬. কর্মস্থলে দুর্ঘটনায় নিহত শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ ১০ লাখ টাকা নির্ধারণ।

৭. প্রত্যেক নৌশ্রমিককে মালিক কর্তৃক নিয়োগপত্র, পরিচয়পত্র ও সার্ভিস বুক প্রদান। ৮. নদীর নাব্য রক্ষা ও প্রয়োজনীয় মার্কা, বয়া ও বাতি স্থাপন। ৯. মাস্টার/ড্রাইভার পরীক্ষা, সনদ বিতরণ ও সনদ নবায়ন, বেআইনি নৌ চলাচল বন্ধ করা। ১০. নৌপরিবহন অধিদপ্তরে সব ধরনের অনিয়ম ও শ্রমিক হয়রানি বন্ধ এবং ১১. নৌযান শ্রমিকদের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।

আন্দোলনকারীরা জানান, ফেডারেশনের পক্ষ থেকে ১১ দফা উপস্থাপন করা হলেও তাদের মূল দাবি ২০১৬ সালে প্রকাশিত গেজেট অনুযায়ী সর্বস্তরের শ্রমিকদের বেতন দিতে হবে।

বৃহস্পতিবার প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করে নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন। ওইদিন শ্রমিক প্রতিনিধিদের নিয়েও সভা করে ফেডারেশন। সেখানে দাবি আদায় না হওয়ার পর্যন্ত পূর্ব ঘোষিত কর্মবিরতি কর্মসূচি পালন থেকে সরে না আসার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি শাহ আলম ভূঁইয়া বলেন, ‘২০১৮ সালের আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত তারা তিনবার ধর্মঘটে গেছেন। প্রতিবারই শ্রম মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে ধর্মঘট প্রত্যাহার করানো হয়। পরে মালিকরা দাবি মেনে নেননি।’

‘এবারও ধর্মঘট বন্ধ করতে বুধবার শ্রম মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে সভা হয়। সেখানে অয়েল ট্যাঙ্কার মালিক ছাড়া অন্য নৌযানের মালিক প্রতিনিধিরা আসেননি। কোনও সমাধান হয়নি। আমরা ২৮ নভেম্বর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছি। হঠাৎ করে ধর্মঘটে আসিনি।’

শাহ আলম আরও জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে ফেডারেশনভুক্ত সংগঠনের প্রতিনিধিদের নিয়ে সভা হয়। এতে সিদ্ধান্ত হয়েছে, যাত্রীবাহীসহ সব নৌযানের মালিক প্রতিনিধিদের উপস্থিতি ছাড়া শ্রম মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কোনও ধরনের বৈঠক হবে না। কোনও আশ্বাসও শ্রমিকরা মানবেন না।

#এসএস/বিবি/৩০ ১১ ২০১৯


জাতীয় ডেস্ক, বিবি
Published at: শুক্র, নভেম্বর ২৯, ২০১৯ ৩:৫২ অপরাহ্ন
Share with others:

Recent Posts

Recently published articles!