পদ্মা নদীর সেতু...

পদ্মা নদীর সেতু...

যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয়েছে পদ্মা সেতু। আর অপেক্ষায় নয় ফেরির। যানবাহনগুলো সড়কপথে ধরে এসে চোখের পলকে পার হচ্ছে পদ্মা নদীর সেতু।

২৫ জুন শনিবার প্রধানমন্ত্রীর বর্ণাঢ্য উদ্বোধনের পর ২৬ জুন রোববার ভোর ছয়টা থেকে সব ধরনের যানবাহন চলাচল শুরু হয়েছে বহুল প্রতীক্ষিত এ সেতুতে। নির্ধারিত টোল দিয়ে সেতু পার হচ্ছে সব যানবাহন।

প্রথম দিনেই সেতুতে ওঠার জন্য রাত থেকে দুই প্রান্তে তৈরি হয় প্রায় ৬-৭ কিলোমিটার দীর্ঘ যানবাহনের সারি। দাঁড়িয়ে ছিল সারি সারি ট্রাক, কাভার্ড ভ্যানসহ অন্যান্য গাড়ি। তবে সকালে সেতু খোলার পর যান চলাচল শুরু হলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

যাত্রা শুরু হলে সবাই প্রথমবারের মতো সেতুতে উঠতে পেরে সবাই উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। আজ প্রথম টোল দিয়েছেন এক মোটরসাইকেল আরোহী। তার নাম আমির হোসেন। তিনি দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থেকে ফরিদপুরের উদ্দেশে গেছেন।

তিনি বলেন, টোলের ১০০ টাকা দিয়ে প্রথম যাত্রী হয়ে পদ্মা সেতু পাড়ি দিতে পেরে আমি আনন্দিত। আমার আশা ছিল সর্বপ্রথম আমি পদ্মা সেতুতে ওঠব। আমার আশা আল্লাহ পূরণ করেছে।

সেতুতে ছোট বাসে ১৪০০ টাকা, মাঝারি বাসে ২০০০ টাকা এবং বড় বাসে ২৪০০ টাকা টোল দিতে হচ্ছে। ছোট ট্রাকের টোল ১৬০০ টাকা, মাঝারি ট্রাকে ২১০০-২৮০০ টাকা, বড় ট্রাকে ৫৫০০ টাকা। পিকআপের টোল ১২০০ টাকা।

প্রথম টোল দেন শেখ হাসিনা

স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। খুললো যোগাযোগের নতুন যুগের এক দুয়ার। মাওয়া প্রান্ত থেকে প্রথম যাত্রী প্রধানমন্ত্রী। তিনি পদ্মা সেতুতে ১৬ হাজার ৪০০ টাকা টোল দিয়েছেন। এর মধ্যে নিজের গাড়ির জন্য ৭৫০ টাকা টোল দিয়েছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর গাড়িবহরে ১৮ টি গাড়ি ছিল। প্রধানমন্ত্রীর ১৬ হাজার ৪০০ টাকা টোল দেয়ার কথা জানান।

যেভাবে উদ্বোধন...

২৫ জুন শনিবার দুপুর ১২টার দিকে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তের সুধী সমাবেশের পর মাওয়া প্রান্তে সুইচ টিপে সেতুর ফলক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী। আর এর মাধ্যমেই খুলে গেল দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলার সঙ্গে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের অপরাপর অংশের জন্য সংযোগ, যোগাযোগ ও সম্ভাবনার অনন্ত দুয়ার। দুপুর ১২টার দিকে মাওয়া প্রান্তে ফল উন্মোচনের মাধ্যমে পদ্মা সেতুর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি সেখানে উদ্বোধনী ফলক ও ম্যুরাল-১ উন্মোচনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করেন। এর আগে তিনি সেখানে মোনাজাতেও যোগ দেন।

উদ্বোধনের পর প্রধানমন্ত্রী মাওয়া পয়েন্ট থেকে শরীয়তপুরের জাজিরা পয়েন্টের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন। জাজিরার দিকে যাওয়ার পথে দুপুর ১২টা ১২ মিনিটের দিকে গাড়ি থামিয়ে নেমে যান প্রধানমন্ত্রী। পদ্মা সেতুতে দাঁড়িয়ে তিনি বিমান বাহিনীর মহড়া দেখেন। এরপর ১২ টা ২৬ মিনিটের দিকে তিনি আবার গাড়িতে ওঠেন। সেখান থেকে তিনি জাজিরা প্রান্তে পৌছান।

জাজিরা প্রান্তেও দুপুর ১২ টা ৩৮ মিনিটের দিকে ফলক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। এর আগে সেখানে মোনাজাত হয়। প্রধানমন্ত্রী মাওয়া প্রান্তে সেতুর উদ্বোধন করে টোল দিয়ে গাড়িতে সেতু পার হন। যান অপর প্রান্তে। সেখানে শনিবার ভোর থেকে ছিলো মানুষের ঢল। দক্ষিণের নানা প্রান্ত থেকে মানুষ জড়ো হচ্ছে সেখানে। নানা রঙের টি শার্টে, নেচে গেয়ে সমাবেশে আসে মানুষ।

#তমহ/বিবি/২৬-০৬-২০২২

ক্যাটেগরী: জাতীয়

ট্যাগ: জাতীয়

জাতীয় ডেস্ক, বিবি রবি, জুন ২৬, ২০২২ ১:১১ পূর্বাহ্ন

Comments (Total 0)