এখানে জীবন সুন্দর !

এখানে জীবন সুন্দর !

গ্রাম সুন্দর না শহর? এই প্রশ্নের উত্তর দেয়ার আগে বলে নিই যে, বাংলা সিনেমায় আয়নাবাজি, স্বপ্নজাল, শিকারী বা মনপুরার মতো সিনেমা উপভোগ মানে গতানুগতিক বাংলা সিনেমার ভিড়ে গ্রামীণ জীবনের স্বাদ পাওয়া।

গ্রাম দু'দিনের জন্য যেমন তার গোধুলি দিয়ে আকৃষ্ট করে, নদীর তীরে নৌকার পালে বাতাস ভালো লাগে, তেমনি দু'দিন ইন্টারনেট, ফাস্টফুড আর শহুরে জীবনের ব্যস্ততার অভাবে নানীর হাতের পিঠা পানসে হয়ে যায়। বাংলা সিনেমায় এই সিনেমাগুলোও ঠিক এমন।

হলিউড, বলিউড বা ইরানি ও অন্যান্য সিনেমার দর্শকরা বাংলা সিনেমায় এরকম একটু গ্রমীণ স্বাদ পেতে পারে সাপলুডু দেখে। তবে সাপলুডু নিয়ে যত পজিটিভ রিভিউ দেখলাম, হলে গিয়ে ঠিক ততটা মনে হয়নি একবারো।

বিদ্যা সিনহা মিম গত সপ্তাহেই একটা ইন্টারভিউয়ে বলেছিলো, "গল্পই নাকি নায়ক"। ছবি প্রচারণায় আরেফিন শুভোর এ্যাকশন নায়ক চেনার উপায় খুঁজতে গিয়েও ঠিক খুঁজে বের করা হলো না কোন নায়ককে।

ছবির গল্পকে যদি বলি নায়ক, তবে সাপলুডু কোন নায়কই হতে পারেনি। খুব ছোট্ট একটা থিম নিয়ে জোরাজুরি বা জোড়াতালি দিয়ে দীর্ঘ করার চেষ্টা করা হয়েছে বলে মনে হলো।

ছোট পর্দার বেশ কয়েকজন চরিত্র সামন্য একটু উপস্থিতি দিয়ে অযথা কাহিনির প্রয়োজনীয় হয়ে ওঠার চেষ্টা করেছেন। (আসলে বলা মুশকিল, কেন:মৌসুমি হামিদ, মারজুক রাসেলসহ বেশ কয়েকটা চরিত্র যাদের কিছু সংলাপ বলার জন্য এমনি এমনি কাস্ট করানো হয়েছে, থ্রিলার সিনেমায় কখনো এরকম বাড়তি চরিত্র দেখিনি কখনো।)

বাংলা সিনেমার সবচেয়ে দুর্বল জায়গা "সংলাপ"। সিনেমাটি চমৎকার থিম নিয়ে শুরু হলেও এত নিম্নমানের সংলাপ তা সামনে টেনে নিতে পারেনি।

অভিনয়ের কথা বললে, শুভর আলাদা কোন চরিত্র নেই। শুভকে অন্য যেসব নাটক বা সিনেমায় ন্যাকামি করতে দেখা যায় ঠিক তেমনি ন্যাকামি করেছে বেশ খানিক। আর সবচেয়ে চোখে পড়ার মতো হলো, বিদ্যা সিনহা মিমের এই সিনেমায় কি রোল ছিলো... মানে কোন প্রধান নারী চরিত্র এতটা কম গুরুত্ব পেয়েছে:বাংলা সিনেমায় কখনো ঘটেনি।

থ্রিলার সিনেমায় প্রতিটা শট একটার কারণে আরেকটা হয়। একটু অমনোযোগী হলে আপনি কাহিনি মিস করবেন কিন্তু সাপলুডুতে আপনি পপকর্ন খেতে খেতে পাশের জনের সাথে কিচ্ছুক্ষণ খুনসুটি করে নিয়ে আবার দেখুন, বুঝে ফেলবেন আগে কি কি হয়েছে।

সিনেমায় কাউকে নিরাশ করা হয়নি, যারা বিকিনি পরা নায়িকাদের নাচ দেখেন তাদের কথা মাথায় রেখে আইটেম গার্ল তার পেটের মাঝে ট্যাটু ডিজাইন করে নাচ দেখাবেন প্রথমেই।

আগেই বলে নিলাম, হলিউড, বলিউডের সিনেমা দেখার পর বাংলায় সংলাপ বলা একটা মুভি দেখে মুখ দিয়ে আপনা-আপনি WOW বের হয়নি কতদিন জানিনা। তবে সাপলুডু শহুরে জীবনে দু'দিন কাটানো গ্রামের মতো সুন্দর।

লেখকঃ নাহিদ ইমরান শাওন, শিক্ষার্থী, জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া ইস্টাডিজ বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। 

#এসএস/বিবি/২৪-১২-২০১৯

ক্যাটেগরী: আলাপ

ট্যাগ: আলাপ

আলাপ ডেস্ক, বিবি মঙ্গল, ডিসেম্বর ২৪, ২০১৯ ১২:২৬ অপরাহ্ন

Comments (Total 0)