আগস্টে সর্বনিম্ন ঋণ প্রবৃদ্ধি

আগস্টে সর্বনিম্ন ঋণ প্রবৃদ্ধি

চলতি বছরের আগস্ট মাসে বেসরকারি খাতের ঋণের প্রবৃদ্ধি কমে ৯ দশমিক ৮৬ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, যা ১১ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। এর আগে গত বছরের সেপ্টেম্বরে বেসরকারি খাতের ঋণের প্রবৃদ্ধি ছিল ৯ দশমিক ৬৯ শতাংশ। আবার চলতি বছরের জুলাইতে প্রবৃদ্ধি ছিল ১০ দশমিক ১৩ শতাংশ। সেই অনুযায়ী প্রবৃদ্ধি ২৭ বেসিস পয়েন্ট কমেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
খাতসংশ্লিষ্টরা জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঘিরে গত জুলাই-আগস্ট মাসে অস্থিরতার প্রভাব পড়েছে দেশের আমদানিতে। আমদানির এলসি খোলা কমে যাওয়া বেসরকারি খাতের ঋণের চাহিদা তেমন ছিল না। তাই আগস্টে প্রবৃদ্ধি কমেছে। এছাড়া সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি ও ঋণের সুদহার বেড়ে যাওয়ায় প্রবৃদ্ধি কমেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে পণ্য আমদানির এলসি (ঋণপত্র) খোলা ও নিষ্পত্তি উভয়ই কমেছে প্রায় ১৩ শতাংশ। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, গত জুলাই ও আগস্টে ১০ দশমিক শূন্য ৩ বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানির এলসি খোলা হয়েছে, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ১ দশমিক ৪৮ বিলিয়ন ডলার কম। শতাংশের হিসাবে তা ১২ দশমিক ৮৫ শতাংশ কম। ওই বছরের জুলাই-আগস্টে এলসি খোলা হয়েছিল ১১ দশমিক ৫১ বিলিয়ন ডলারের। দেশে বিনিয়োগ পরিস্থিতি বোঝার অন্যতম একটি সূচক হলো মূলধনি যন্ত্রপাতির আমদানি নিরূপণ। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে মূলধনি যন্ত্রপাতির আমদানির ঋণপত্র (এলসি) খোলা কমেছে প্রায় ৪৪ শতাংশ।

বছরের নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে পণ্য আমদানির এলসি খোলা কমার কারণ হিসেবে রাজনৈতিক অস্থিরতাকে কারণ বলে মনে করছেন মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান। তিনি বলেন, ‘দুই কারণে আমদানির এলসি খোলা কমেছে। প্রথমত, সম্প্রতি দেশে ঘটে যাওয়া রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে। তখন যোগাযোগ ব্যবস্থায় ব্যাঘাত ঘটেছে। আবার সে সময় ব্যাংকও বন্ধ ছিল। তাতে আমদানি-রপ্তানিতে সরাসরি ব্যাঘাত ঘটেছে। ইন্টারনেট বন্ধ থাকার কারণেও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় সারাদেশে; যার ফলে সরাসরি আমদানিতে প্রভাব পড়েছে। যার ফলে বেসরকারি খাতে ঋণের চাহিদা কম ছিল। তাই আগস্টে বেসরকারি খাতের ঋণের প্রবৃদ্ধি কমেছে।

এলসি কমার দ্বিতীয় কারণ হিসেবে বিনিয়োগকারীদের পিছুটান দেয়ার কথা বলছেন এ ব্যাংকার। তার ভাষ্য, ‘আগের মতো তারা বিনিয়োগ করছেন না, তাতে আমদানি কমেছে। এটা কমে যাওয়ার কারণ ডলার দরে অস্থিতিশীলতা। তবে এখন ডলার দরে স্থিতিশীলতা আসছে। এটা বজায় থাকলে আবার বিনিয়োগ বাড়বে। তখন বেসরকারি খাতের ঋণের প্রবৃদ্ধিও বাড়বে।’ এদিকে দেশে কয়েক বছর ধরে চলছে উচ্চ মূল্যস্ফীতি। অর্থের জোগান কমিয়ে এই মূল্যস্ফীতির লাগাম টানতে চাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। চলতি বছরই পাঁচ দফা বাড়ানো হয়েছে নীতি সুদহার। এর প্রভাবে একদিকে গ্রাহক পর্যায়ে ঋণের খরচ বাড়ছে, অন্যদিকে বেসরকারি খাতে কমছে ঋণপ্রবাহ। ফলে চাপে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। সুদহার বাড়ার বিরূপ প্রভাব পড়ছে ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগে।
#তমহ/বিবি/১৩অক্টোবর২০২৪


ব্যাংক ডেস্ক, বিবি
Published at: রবি, অক্টোবর ১৩, ২০২৪ ১:৪০ অপরাহ্ন
Share with others:

Recent Posts

Recently published articles!