তরুণদের নয়া শত্রু ই-সিগারেট...

তরুণদের নয়া শত্রু ই-সিগারেট...

সিগারেট কোম্পানিগুলো তরুণদের ই-সিগারেটে আসক্ত করতে নানা কৌশলে ই-সিগারেটের প্রচারণা চালাচ্ছে। যা তরুণ প্রজন্মের জন্য বড় হুমকি বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।তাই দ্রুতই দেশে ই-সিগারেট বন্ধ করা জরুরি। যা করতে হলে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনে উদ্যোগ নিতে হবে। ৩ নভেম্বর মঙ্গলবার ট্যোবাকো কন্ট্রোল এন্ড রির্সাচ সেলের (টিসিআরসি) উদ্যোগে  ঢাকা অফিসার্স ক্লাব মিলায়তনে 'তরুণদের নেশায় আসক্ত করতে  নতুন হুমকি ই-সিগারেট: বন্ধের উপায়' শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন বক্তারা। এর পাশাপাশি ই-সিগারেট আমদানি বন্ধের ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তারা।

অনুষ্ঠানে সভাপতি ছিলেন ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারি। প্রধান অতিথি ছিলেন ডেপুটি স্পিকার এডভোকেট ফজলে রাবি মিয়া, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় কমিটির সভাপতি শামসুল হক টুকু।

ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানে যোগ দেন সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা, হাসানুল হক ইনু, রানা মোহাম্মদ সোহেল, প্রফেসর ডা. হাবিবে মিল্লাত মুন্না, শিরিন আক্তার, প্রফেসর মাসুদা রশিদ চৌধুরী। আরও যুক্ত হন জাতীয় অধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার এম এ মালেক, ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত ও দ্য ইউনিয়নের পরিচালক গেন কোয়ান।

অনুষ্ঠানে মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অ্যাডভোকেট সৈয়দ মাহবুবুল আলম। যেখানে তিনি বলেন, বাংলাদেশে ই-সিগারেট নিয়ে স্পষ্ট কোন আইন না থাকায় অহরহ যত্রতত্র ই-সিগারেট বাংলাদেশে আমদানি ও বিক্রয় করা হচ্ছে অত্যন্ত সুলভ মূল্যে। সিগারেট কোম্পানীগুলো ইসিগারেট কম ক্ষতিকর বলে তরুণদের  উদ্বুদ্ধ করছে।  তবে ইতিমধ্যে ই সিগারেটের ভয়াবতা থেকে জনগণকে রক্ষার জন্য ভারতসহ বিশে^র ৪২ টি দেশে ই-সিগারেট এবং ঐঞচ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ৫৬টি দেশ ই-সিগারেট ক্রয়-বিক্রয়ের উপর বাধ্যবাধকতা আরোপ করেছে।

এড. ফজলে রাবি মিয়া এমপি বলেন, আমাদের ই সিগারেট বন্ধে আমরা প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করব এবং তামাক নিয়ন্ত্রণে আমরা ককাস তৈরি করব। আমরা বিশ^াস করি ২০৪০ সালের আগেই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষিত তামাকমুক্ত দেশ বাস্তবায়ন করব।

ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারির বলেন, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন অমান্য করে তামাক কোম্পানীগুলো ইউটিউব, ফেসবুক, ওয়েবসাইট ও অন্যান্য সামাজিক মাধ্যমে বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। এছাড়াও যারা ধুমপান ছাড়তে চায় তাদেরকে প্রচলিত সিগারেটের বদলে ই-সিগারেট ব্যবহারে উৎসাহিত করছে। ই সিগারেটের প্রসার বন্ধে এখনই কঠোর আইন প্রণয়ন ও প্রচলিত আইনের কঠোর প্রয়োগ জরুরি।

শামসুল হক টুকু বলেন, ধূমপান মাদকের প্রবেশ দ্বার। আমাদের নতুন প্রজন্ম ই সিগারেট নামে ক্ষতিকর পণ্যে আসক্ত হয়ে পড়ার আগেই আমাদের এর প্রসার রুখতে হবে। আইনের ফাকফোকর ব্যবহার করে ই সিগারেট আমদানী করা হচ্ছে তা নির্ণয় করে আমদানী বন্ধের উদ্যোগ নিতে হবে। প্রয়োজনে একটি বিশেষ অধ্যাদেশ রাজি করতে হবে।

হাসানুল হক ইনু বলেন, ই সিগারেট তরুণদের তামাক সেবনের প্রেরণা দেয়। সিগারেট থেকে ই সিগারেট নিরাপদ তা ভাবার কোন কারণ নেই। ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, মুনাফার জন্য আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মকে ঝুকিতে ফেলেছে ই সিগারেট ব্যবসায়ীরা। আমরা সকল সংসদ সদস্য মিলে ই সিগারেটের ভয়াবতা থেকে তরুণদের রক্ষা করতে কঠোর আইন প্রণয়ন করতে হবে।

প্রফেসর ডা. এম এইচ মিল্লাত বলেন,  সিগারেটের কোম্পানীগুলো আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মকে হত্যা করছে। আমরা সকল সংসদ সদস্য ই সিগারেট বন্ধে একমত। সরকারী-বেসরকারী সবাই মিলে ই-সিগারেটের প্রসার বন্ধে কাজ করতে হবে। শিরিন আক্তার বলেন, ই সিগারেটের প্রসারের আগেই এর আমদানি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করতে হবে । আর এর জন্য এখনই আমাদের নীতিগত সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

প্রফেসর মাসুদা রশিদ চৌধুরি বলেন, স্বাস্থ্যকরণ ক্ষতি বিবেচনা করে ইতিমধ্যেই পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ই সিগারেট নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আমাদের নতুন প্রজন্ম রক্ষার স্বার্থে এ মূহুর্তে ই সিগারেট নিষিদ্ধের বিকল্প নেই।

অনুষ্ঠানে দেশ-বিদেশ থেকে শতাধিক তামাক নিয়ন্ত্রণকর্মী ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।

বিবি/টিএমএইচ/০৪-১১-২০২০

ক্যাটেগরী: অনুসন্ধানী

ট্যাগ: অনুসন্ধানী

অনুসন্ধানী প্রতিবেদক, বিবি বুধ, নভেম্বর ৪, ২০২০ ৬:২৮ পূর্বাহ্ন

Comments (Total 0)