বন্যায় বিপাকে ধানচাষীরা

বন্যায় বিপাকে ধানচাষীরা

জেলায় জেলায় বন্যা হচ্ছে। বিপদে মানু্ষ। স্থবির জনজীবন। বানে ভাসছে ফসলের মাঠ। বেশি বিপদে অনেক জেলার ধানচাষীরা। কোথাও নষ্ট হচ্ছে বীজতলা। কোথাও তলিয়ে যাচ্ছে ধানগাছ।

তবে চলমান বন্যায় আমন আবাদে কৃষি মন্ত্রণালয়ের যথাযথ প্রস্তুতি রয়েছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘আশা করি অসুবিধা হবে না।’

পানির নিচে রোপা আমন...

এবারের বন্যায় প্লাবিত হয়েছে সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার আটটি ইউনিয়নের ২১০০ হেক্টর জমির রোপা আমন ধান। এতে বিপুল ক্ষতির আশঙ্কায় আছেন কৃষকরা।

উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, তাড়াশ উপজেলার মাগুড়া বিনোদ, সগুনা ও বারুহাস, তাড়াশ, দেশীগ্রাম, নওগাঁ ও মাধাইনগর ইউনিয়নের উঁচু জমিতে এবার প্রায় সাড়ে ১৫ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধান রোপণ করা হয়েছিল। কিন্তু গত দুই সপ্তাহের টানা বৃষ্টি ও বন্যার পানি বাড়ায় প্লাবিত হয়েছে চারটি ইউনিয়নে ২১০০ হেক্টর জমির ধান। প্রতিদিনই প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা।

বীজতলায় বড় ক্ষতি!

সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলায় তিন দফায় দীর্ঘমেয়াদী বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে। বন্যা পানি বিকট আকার ধারণ না করলেও উপজেলার কৃষকের আমন ফসলের ও যোগাযোগ ব্যবস্থার ক্ষতির পরিমাণটা বেশি।বীজতলাসহ আমন ধান রোপনের মোক্ষম সময়ে বন্যা আঘাত হানে ফসলের মাঠে। বন্যার পানির স্থায়িত্ব বেশি হওয়ায় দীর্ঘ সময়ের বন্যার পানির নাকানি-চুবানিতে সদ্য রূপায়িত আমন ধানের গাছে পচন ধরেছে। বীজতলায় থাকা ধানের চারা মাটির সাথে শুয়ে আছে। আমন মৌসুমের শুরুতে বড় ধরনের হোঁচট খেয়েছেন উপজেলার কৃষকরা। এই ধাক্কা অনেক কৃষকের পক্ষে সামাল দেওয়া সম্ভব নয়।

বানে ভাসছে ফসলের মাঠ

টাঙ্গাইলের নাগরপুরে বন্যার কারণে ডুবে যাচ্ছে কৃষকের রোপণ করা ধানের ফসলি জমি ও বীজ তলা। অসময়ে হঠাৎ বন্যায় কৃষির ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে মনে করছেন উপজেলা কৃষি বিভাগ। চলতি মৌসুমে উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে প্রায় এক হাজার হেক্টর জমিতে রোপা-আমন ধান লাগানো হয়েছে। করা হয়েছে ব্যাপক বীজতলাও। চলতি গত আগস্ট মাসের শুরুতেই মাঝে মধ্যেই বৃষ্টিপাতের কারণে বিল ও নিম্নাঞ্চলে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সেসব এলাকা পানিতে টইটম্বুর।

বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে ২৩ হাজার ৮০০ হেক্টর জমির আমন ধান, ২৮৫ হেক্টর জমির বিভিন্ন সবজি ক্ষেত ও ১১৫ হেক্টর জমির বীজতলা।

এদিকে কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে ২৩ হাজার ৮০০ হেক্টর জমির রোপা আমন, ২৮৫ হেক্টর জমির বিভিন্ন সবজি ক্ষেত ও ১১৫ হেক্টর জমির বীজতলা।

‘আমন আবাদে অসুবিধা হবে না’

মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম প্রেস ব্রিফিংয়ে জানিয়েছেন, ৬ সেপ্টেম্বর সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা বৈঠকে বন্যা নিয়ে আলোচনা হয়। চলমান বন্যায় আমন আবাদে কৃষি মন্ত্রণালয়ের যথাযথ প্রস্তুতি রয়েছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘আশা করি অসুবিধা হবে না।’ মন্ত্রিপরিষদ সচিব সাংবাদিকদের বলেন, ‘কোনো এলাকাতে যদি বিশেষ করে ভাদ্র মাসে পানি আসে আর বঙ্গোপসাগরে যদি জোয়ার থাকে তাহলে পানি নামতে দেরি হয়। সেক্ষেত্রে আমন চাষে যদি কোনো অসুবিধা হয়, তাহলে টি-আমন জালা প্রস্তুত রাখতে বলেছেন।’

তিনি আরো জানান, ‘কৃষিমন্ত্রী বলেছেন ৬০ লাখ একর আমন চাষের কথা থাকলেও ৫৭ লাখ একর জমিতে আমন চাষ ইতিমধ্যে হয়ে গেছে। তারা তাদের লক্ষ্যমাত্রার কাছাকাছি আছে। সুতরাং তাদেরও প্রস্তুতি আছে। আশা করি অসুবিধা হবে না।’

#তমহ/বিবি/০৭-০৯-২০২১

ক্যাটেগরী: কৃষি

ট্যাগ: কৃষি

কৃষি ডেস্ক, বিবি মঙ্গল, সেপ্টেম্বর ৭, ২০২১ ১:৩৫ পূর্বাহ্ন

Comments (Total 0)