বস্ত্র খাতের অবস্থা নাজুক
দেশের পুঁজিবাজারে বস্ত্র খাতের অবস্থা খুবই নাজুক। সব খাতের অবস্থাই খারাপ তবে দীর্ঘদিন ধরে মন্দার ভেতর বস্ত্র খাতের অবস্থা আরও খারাপ। বাজারে তালিকাভুক্ত ৫৫টি কোম্পানির মধ্যে ১৯টির দরই ১০ টাকা বা অভিহিত মূল্যের নিচে নেমে এসেছে। এই মধ্যে ১০টি আবার ৫ টাকারও কম দরে লেনদেন হচ্ছে।
বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত হচ্ছে তৈরি পোশাক শিল্প বা বস্ত্র খাত।কিন্তু এই খাতের শেয়ারে বিনিয়োগ করে শান্তিতে নেই বিনিয়োগকারীরা; পুঁজি হারিয়ে দিশেহারা অনেকে।
বস্ত্র খাতের এই দুরবস্থা সামগ্রিক পুঁজিবাজারেও প্রভাব ফেলেছে বলে মনে করছেন বাজার বিশ্লেষকরা।
নগদ লভ্যাংশের পরিবর্তে বোনাস শেয়ার দেওয়ার কারণে এমনটা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ডিবিএ) সভাপতি শাকিল রিজভী। তিনি বলেন, “বস্ত্রখাতের শেয়ারগুলোর দাম কমার পেছনে তাদের লভ্যাংশ দেওয়ার যে নীতি সেটা দায়ি।এ খাতের যে কোম্পানিগুলো পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আছে তাদের বেশিরভাগই বিনিয়োগকারীদের নগদ লভ্যাংশ (ক্যাশ) না দিয়ে বোনাস শেয়ার দিয়ে থাকে। ফলে শেয়ারের সংখ্যা অনেক বেড়ে যায় এবং শেয়ারের দাম কমে যায়।
বাজার বিশ্লেষক আইডিএলসি ইনভেস্টমেন্টসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মনিরুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশে তৈরি পোশাক খাতের কোম্পানিগুলো আগে যে হারে মুনাফা করত এখন আর সে হারে মুনাফা করতে পারছে না। অর্থাৎ আগে যদি তারা ১০০ টাকা বিক্রি করে বছরে ৮/১০ টাকা মুনাফা করতে পারতো।
এখন সেই মুনাফার নেমে এসেছে ২/৩ টাকায়।
“আমাদের পোশাক শিল্প মালিকরা টিকে থাকার জন্য অনেক কম লাভে পণ্য বিক্রি করছে। কারণ কারখানা যদি বন্ধ রাখে তাহলে তো ঋণের টাকা দিতেই হবে। তাই খরচ উঠানোর জন্য অনেক কম দরে পণ্য বিক্রি করে দিচ্ছেন।”
তবে পোশাক শিল্প মালিকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএ’র সভাপতি রুবানা হক বলেন,“এই মুহূর্তে বিশ্ব বাজারে চলছে মন্দা। আমাদের তৈরি পোশাক খাতে নেগেটিভ গ্রোথ হয়েছে গত তিন মাসে। এই অবস্থা ডিসেম্বর পর্যন্ত চলতে পারে। বাংলাদেশ থেকে যে হারে রপ্তানি হতো সেই রপ্তানিতে ভাটা পড়েছে। ফলে পোশাক কোম্পানিগুলোর বিক্রি কমেছে; সাথে কমেছে মুনাফা।
“এছাড়া আমাদের বেশ কিছু ব্যবসা পাকিস্থানে চলে যাচ্ছে, মায়ানমারে চলে যাচ্ছে। ভিয়েতনামে তো যাচ্ছেই। অনেক দেশ বিভিন্ন ধরনের ভর্তুকি দিয়ে ব্যবসাটা ধরে রেখেছে আমরা পারছি না।”
অপর বাজার চট্টগ্রামে প্রধান সূচক সিএসপিআই ১২৪ দশমিক ৭৬ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১৪ হাজার ৩৩৬ দশমিক ৩৩ পয়েন্টে।
২৮ অক্টোবর ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ওয়েবসাইট ঘেটে দেখা যায়, বস্ত্র খাতের যে ১৯টি কোম্পানির শেয়ার ১০ টাকার নিচে লেনদেন হয়েছে সেগুলো হচ্ছে, আলিফ ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি ৬ টাকা ২০ পয়সা। অলটেক্স ইন্ড্রাষ্ট্রিজ ৮ টাকা ৩০ পয়সা। সি অ্যান্ড এ টেক্সটাইলস ১ টাকা ৮০ পয়সা। ঢাকা ডাইং এন্ড ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি ৩ টাকা; ডেলটা স্পিনার্স ৩ টাকা ৯০ পয়সায় বিক্রি হয়েছে।
ইভিন্স টেক্সটাইল বিক্রি হয়েছে ৯ টাকায়। ফ্যামিলিটেক্স (বিডি) এর দর ২ টাকা ৩০ পয়সা। জেনারেসন নেক্সট ফ্যাশানস বিক্রি হয়েছে ২ টাকা ৫০ পয়সায়।ম্যাকসন্স স্পিনিং ৪ টাকা ৩০ পয়সা। মোজাফফর স্পিনিং মিলস ৬ টাকা ৬০ পয়সা।
এছাড়া মেট্রো স্পিনিং ৫ টাকা ৭০ পয়সা, মিথুন নিটিং এন্ড ডাইং ৬ টাকা ৮০ পয়সা, নুরানী ডাইং এন্ড সোয়েটার ৯ টাকা ২০ পয়সা, রিজেন্ট টেক্সটাইল ৮ টাকা ৭০ পয়সা, আর এন স্পিনিং ২ টাকা ৫০ পয়সা, তাল্লু স্পিনিং ৩ টাকা ৩০ পয়সা, তুং হাই নিটিং এন্ড ডাইং ২ টাকা ১০ পয়সা, জাহিন স্পিনং ৫ টাকা ৩০ পয়সা এবং জাহিনটেক্স ইন্ডাস্ট্রিস ৪ টাকা ১০ পয়সায় বিক্রি হয়েছে।
ডিএসই’র আরএসআই আরএসআই (রিলেটিভস স্ট্রেন্থ ইনডেক্স) এখন ৩৪ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিস এর ভাষায় বলা হয়, কোন শেয়ারের আরএসআই ৩০ এর নিচে নামলে শেয়ারটি কেনা যায় আর ৮০ এর উপরে উঠলে বিক্রি করে দেওয়া যায়।
#এসএস/বিবি/২৮ ১০ ২০১৯
Share with others:
Recent Posts
Recently published articles!
-
শেয়ারবাজার ডেস্ক, বিবি
-
ব্যবসা ডেস্ক, বিবি
-
শেয়ারবাজার ডেস্ক, বিবি
-
ভূমি ডেস্ক, বিবি
-
প্রবাস ডেস্ক, বিবি