চীনা নগর ইয়ানের বাসন্তী বাগানে...

চীনা নগর ইয়ানের বাসন্তী বাগানে...

এপ্রিল মাস। চীনেও চাষাবাদের ভরা মৌসুম। বাগানে বাগানে ফুল আর ফল। চীনা নগর ইয়ান আনে ফুল ফুটেছে। সেসঙ্গে চাষের কাজ চলছে। চাষের কাজ শুরুর সাথে সাথে  ফসলের কাজও শুরু হয়। হুয়া থু মাল ভূমির বাসিন্দারা মিষ্টি ফল চাষে সফলতা দেখিয়েছেন।

বসন্তকালে আবহাওয়া একটু ঠান্ডা হলেও ইয়ান আন শহরের চাং চা গ্রামের ৬০টির বেশি গ্রীনহাউস যেন গ্রীষ্মকালের মতোই উষ্ণ। সবুজ লতার ওপরে লাগানো বেগুনগুলো দেখতে অনেক সুন্দর। ছোট্ট বৈদ্যুতিক যানবাহনে বসে নির্দিষ্ট পথে ৫১ বছর বয়সি কৃষক ওয়াং ছিং পিং বেগুন তুলছেন। তার মুখে লেগে আছে তৃপ্তির হাসি। তিনি বলেন, ছোট্ট বৈদ্যুতিক যানবাহন তাকে অনেক সাহায্য করে। গ্রীনহাউসের দৈর্ঘ্য ১৮০ মিটার। তাই এর ভেতর থেকে সবজি বের করে আনা অনেক কঠিন। তিনবছর আগে তিনি গ্রীনহাউসে চাষ শুরু করেন। তাতে চাষের কোন নির্দিষ্ট ঋতু লাগে না। বছরের যে কোন সময়ে চাষ করতে পারেন তিনি। তার পরিবার বছরে প্রায় ১০ মাসের মতো বেগুন চাষ করে। গেল বছর তার দুটি গ্রীনহাউসের আয় ছিল ১.৩ লাখ ইউয়ান, এ টাকা তিনি তার ছোট ছেলের বউকে দিয়েছেন।

 

গেল তিন বছরে ইয়ান আন শহরের মোট ২.২ হাজার হেক্টর  জমিতে নতুন করে সৌর গ্রীনহাউস ও সাধারণ গ্রীনহাউস নির্মিত হয়েছে। পাশাপাশি, আরো ১.৮ হাজার হেক্টর গ্রীনহাউসকে সংস্কার করা হয়েছে। সেখানে ফল আর সবজি চাষের আয়তন ৩১ হাজার হেক্টর। আর প্রতিবছর উত্পাদন পরিমাণ ৬২৪ কোটি ইউয়ান।

 

বসন্তের চাষাবাদ প্রযুক্তির উপর নির্ভর করে। পা চা গ্রামের গ্রীনহাউসে দেখা যায়, লাল নেটের ব্যাগের মধ্যে গাছে ঝুলছে তরমুজ। প্রতিটি তরমুজের উপর লাগানো আছে একটি পোস্ট। সেখানে লেখা আছে এর পরাগায়ন ও সম্ভাব্য বাজারজাতকরণের  তারিখ।

 

কৃষক চি সিয়াও চুন তিন বছর ধরে গ্রীনহাউসে তরমুজ চাষ করেন। তিনি বলেন, তার চাষের তরমুজের নাম সিউ লি। এটি দেখতে সুন্দর আর খেতে অনেক মিষ্টি। তরমুজ ঝুলানো হলে তাতে আরও বাতাস ও রোদ লাগে। ফলে শীঘ্রই পরিপক্ক হয়। পাশাপাশি, জমির ব্যবহারের হার বাড়ে। তিনি জানান, তার তরমুজ মে মাসের আগে বাজারে আসবে। আর ওই সময় সাধারণ ক্ষেতে উত্পাদিত তরমুজ পরিপক্ক হবে না, তাই তার তরমুজ উচ্চ দামে বিক্রি হতে পারবে।

 

গ্রীনহাউসে চাষকারী কৃষকদের আয় লক্ষ্যণীয়ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। পাশাপাশি, ফল ও সবজির প্রজাতি, সার ও সেচ প্রযুক্তি উন্নয়নের সাথে সাথে হুয়া থু মালভূমির পাহাড়ি অঞ্চলে ঐতিহ্যিক কৃষির চেহারাও পরিবর্তন হয়েছে।

 

ইয়ান আন কৃষি ও গ্রাম্য ব্যুরোর তথ্য কেন্দ্রের পরিচালক লু চিয়ান হং জানান, ইয়ান আন শহরে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ৯টি প্রাদেশিক পর্যায়ের সুবিধাজনক কৃষি জেলা, ২৫টি পেশাদার উপজেলা, এবং ১২৩টি পেশাদার গ্রাম। সেখানে চাষ করা হয় ঋতু বহির্ভূত সবজি, মৌসুমি ফল এবং সবজি, এবং মাশরুম ও পাহাড়ি সবজিসহ চার ধরনের ফসল। মোট ২.৮ লাখ মানুষ তাতে জড়িত।

 

চার ঋতুর কৃষি উন্নয়ন করার মাধ্যমে স্থানীয়দের আয় অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। আর বসন্ত হলেই মিষ্টি ফল পাওয়া যায়। ওয়াং ওয়ান গ্রামের বাসিন্দা সং সুয়াং পিং বলেন, আগে কেবল তেলের কেক, স্টিমড বান এবং তরমুজের বীজ দিয়ে বাড়িতে অতিথি আপ্যায়ন করা হতো। আর এখন স্ট্রবেরি ও তরমুজসহ তাজা অনেক ফল দিয়ে অতিথি সত্কার করা যায়। তিনি বলেন, সাপ্তাহিক ছুটির সময়ে অনেক পর্যটক শহর থেকে গ্রামে এসে ফল কিনেন। তিনি ৬টি গ্রীনহাউসে চাষ করেন তরমুজ, টমেটো, চেরি টমেটো এবং ক্যান্টালুপ। গেল বছর তিনি জেলা শহরে ১২০ বর্গমিটারের নতুন একটি বাড়ি কিনেছেন। সং সুয়াং পিং বলেন, গ্রীনহাউসের সবজি ও ফল তাদের জীবনকে অনেক সুখী করেছে। * bengali.cri.cn থেকে নেয়া

#তমহ/বিবি/২৫-০৪-২০২২

 

ক্যাটেগরী: ফিচার

ট্যাগ: ফিচার

ফিচার ডেস্ক, বিবি বৃহঃ, মে ১৯, ২০২২ ১০:৩০ পূর্বাহ্ন

Comments (Total 0)