আলো-অন্ধকারে বলিউড...

আলো-অন্ধকারে বলিউড...

প্রমোদতরী। মাদক। তরুণ-তরুণী। এ যেন বলিউডের সেই অ্যাকশন সিনেমা। না, চলচ্চিত্র নয় এ এখন বর্তমান। জেরার পর জেরার মুখে শাহরুখ খানের পুত্র আরিয়ান। তাকে গ্রেপ্তার করে নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো। ছেলে কারাগারে। তাইতো শাহরুখ-গৌরির দিনগুলো বড় কঠিন। এমন অন্ধকার সময় কিন্তু আরো দেখেছে বলিউড।

 

গুরু দত্তের আত্মহত্যা না কি দুর্ঘটনা

গুরু দত্ত ছিলেন পরিচালক, প্রযোজক, নায়ক। পঞ্চাশ ও যাটের দশকে একের পর এক ক্লাসিক হিন্দি ছবির জনক। ১৯৬৪-র ১০ অক্টোবর তাঁর মৃত্যু হয়। মদের সঙ্গে প্রচুর ঘুমের ওষুধ খাওয়ার ফলে। তাঁর ছেলের দাবি, দুর্ঘটনা। কিন্তু বলিউডের অধিকাংশ লোকের বিশ্বাস, আত্মহত্যা। পারিবারিক জীবনের দুঃখ, কাজের চাপ, আবেগপ্রবণ মনের কারণেই না কি তিনি আত্মহত্যার পথ বেছে নেন। গুরু দত্ত আগেও আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলেন। তৃতীয়বারে সফল হন।

 

সঞ্জয় দত্ত ও মাদক

মাদক নিয়ে এখন তোলপাড় বলিউড। কিন্তু সঞ্জয় দত্ত নিজেই জানিয়েছিলেন তাঁর মাদকাসক্তির কথা। ইন্ডিয়া টুডে পত্রিকার কনক্লেভে সঞ্জয় দত্ত জানান, কলেজে পড়ার সময় তিনি মাদকে আসক্ত হয়ে পড়েন। দশ বছর লেগেছিল তাঁর ওই মাদকের নেশা থেকে বেরিয়ে আসতে। রিহ্যাবে যেতে হয়েছিল। আর বাবা সুনীল দত্ত ছেলের পাশে থেকে তাঁর নেশামুক্তি ঘটিয়েছিলেন।

 

সঞ্জয় দত্তের অস্ত্র কেলেঙ্কারি

১৯৯৩ সাল। একের পর এক বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে মুম্বই। সেই বিস্ফোরণের অন্যতম অভিযুক্ত আবু সালেম ও রিয়াজ সিদ্দিকির কাছ থেকে অস্ত্র নিয়েছিলেন সঞ্জয়। তাঁকে টাডায় গ্রেফতার করা হয়। মুম্বই বিস্ফোরণেও জড়ানো হয়। সঞ্জয় অস্ত্র নেয়ার কথা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, পরিবারের সুরক্ষার জন্য নিয়েছিলেন। মুম্বই বিস্ফোরণের অভিযোগ থেকে মুক্তি পেলেও বেআইনি অস্ত্র রাখার দায়ে তাঁর ছয় বছরের সশ্রম কারাদণ্ড হয়।

 

সলমন খান ও কৃষ্ণসার হরিণ

১৯৯৮ সাল। যোধপুরে শুটিং করতে গিয়েছিলেন সলমন খান এবং অন্য তারকারা। তখনই সলমন একটি কৃষ্ণসার হরিণ মারেন বলে অভিযোগ। নিম্ন আদালতে তাঁর পাঁচ বছরের জেল হয়। কিন্তু তাঁর সঙ্গে থাকা সইফ আলি খানের বিরুদ্ধে অভিযোগ খারিজ করে দেয় আদালত। সলমন এক সপ্তাহ জেল খেটেছেন। এখন তিনি জামিনে। তাঁর শাস্তির বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আবেদন জানিয়েছেন।

 

সলমন খান এবং হিট অ্যান্ড রান

চার বছর পর অর্থাৎ ২০০২ সালে সলমন আবার গ্রেফতার হন বেপরোয়া গাড়ি চালিয়ে একজন ফুটপথবাসীকে মারা ও তিনজনকে আহত করার দায়ে। ২০১৫ সালে মুম্বইয়ের সেশন কোর্ট সলমনকে দোষী বলে রায় দেয় ও জানায় তিনি মদ খেয়ে গাড়ি চালাচ্ছিলেন। তাঁর পাঁচ বছরের জেল হয়। কিন্তু যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ না থাকায় হাইকোর্ট তাঁকে অভিযোগমুক্ত বলে ঘোষণা করে। এখন মামলা সুপ্রিম কোর্টে।

 

একের পর এক আত্মহত্যা

সুশান্ত সিং রাজপুতের আত্মহত্যা বা মৃত্যুরহস্য নিয়ে তোলপাড় বলিউড। কিন্তু শুধু গুরু দত্ত বা সুশান্ত নন, প্রচুর বলিউড তারকা আত্মহত্যা করেছেন। ১৯৯৬-তে সিল্ক স্মিতা, ২০০৫ এ ময়ূরী, ২০০৮-এ কুনাল সিং, ২০১৩-তে জিয়া খান, ২০১৫তে শিখা জোশী, ২০১৬-তে প্রত্যুষা বন্দ্যোপাধ্যায়, ২০১৭তে নীতিন কাপুর এবং তারপর ২০২০-তে সুশান্ত সিং রাজপুত। অবশ্য সুশান্তের মৃত্যুরহস্য নিয়ে এখন তদন্ত করছে সিবিআই।

 

বলিউড ও মি টু

মি টু মুভমেন্টের আঁচ ভালো করেই লেগেছিল বলিউডে। শুরু হয়েছিল নানা পাটেকরের বিরুদ্ধে তনুশ্রী দত্তের অভিযোগ দিয়ে। তারপর একের পর এক অভিনেতা মি টু-তে বিদ্ধ হয়েছেন। যেমন অলোক নাথ। টিভি প্রযোজক বিনতা নন্দা অভিযোগ করেন, অলোক নাথ তাঁকে ধর্ষণ করেছেন। অলোক নাথ অস্বীকার করেন। একাধিক অভিনেত্রীর অভিযোগ, অলোকনাথের হাতে তাঁদের লাঞ্ছিত হয়ে হয়েছে। মি টুতে বিদ্ধ হয়েছেন কৈলাশ খের, সলমন খান, সাজিদ খান, অণু মালিকরাও।

 

মাদক ও দীপিকা

সুশান্তের মৃত্যুর পর তদন্ত করতে নেমে মাদক রাখার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় অভিনেত্রী রিয়া চক্রবর্তীকে। কিন্তু সেখানেই মাদককাণ্ড শেষ হয়নি। সম্প্রতি দীপিকা পাড়ুকোন সহ চার নায়িকাকে জেরা করে নারকোটিকস ব্যুরোর আধিকারিকরা। পাঁচ ঘণ্টা জেরার পর দীপিকার ফোন সিজ করা হয়েছে। দীপিকার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি একটি পার্টির জন্য মাদক জোগাড় করেছিলেন।

 

সারা আলি খানকেও জেরা

শুধু দীপিকা পাড়ুকোন নয় সারা আলি খান এবং শ্রদ্ধা কাপুরকেও জেরা করেছে নারকোটিকস ব্যুরোর আধিকারিকরা। সারার বিরুদ্ধেও মাদককাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ আছে। তাঁর মোবাইলও নিয়ে নিয়েছে নারকোটিকস ব্যুরো। মাদককাণ্ডে এই নায়িকাদের যোগাযোগ নিয়ে রীতিমতো আলোড়ন দেখা দিয়েছে বলিউডে।

#তমহ/বিবি/০৬-১০-২০২১

ক্যাটেগরী: বিনোদন

ট্যাগ: বিনোদন

বিনোদন ডেস্ক, বিবি মঙ্গল, অক্টোবর ৫, ২০২১ ১:৪০ অপরাহ্ন

Comments (Total 0)