সবার আগে জীবন-জীবিকা

সবার আগে জীবন-জীবিকা

সবার আগে জীবন-জীবিকা। তাই করোনাকালীন জাতীয় বাজেটে এটা প্রাধান্য পাওয়ার কথা। আসছে ২০২১-২০২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে সেটাই করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

৪ জুন শুক্রবার দুপুরে বাজেট পরবর্তী ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরো জানান, বেসরকারি খাতকে এগিয়ে নিতে এবারের বাজেট ব্যবসাবান্ধব করা হয়েছে।

করোনায় জীবন ও জীবিকাকে প্রাধান্য দিয়ে ৩ জুন বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮৩ কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বাজেট পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী জানান, বেসরকারিখাতকে এগিয়ে নিয়ে মানুষের জীবন ও জীবিকা ঠিক রাখতে কর্পোরেট করে ছাড় দেয়া হয়েছে।

প্রস্তাবিত বাজেটে করের হার কমানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। এটি বাস্তবায়ন করা গেলে রাজস্ব আদায় বাড়বে বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

অর্থমন্ত্রী বলেন, এই বাজেট ব্যবসাবান্ধব হওয়াতে উৎপাদন ও কর্মসংস্থান বাড়বে। তিনি বলেন, এবারের বাজেট ব্যবসাবান্ধব। আমি মনে করি, ব্যবসায়ে সুযোগ-সুবিধা বাড়লে উৎপাদন বাড়বে। আর উৎপাদনে যেতে হলে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে। কারণ লোকবল ছাড়া উৎপাদন সম্ভব না। এজন্য ব্যবসায়ীদের জন্য বাজেটে সুযোগ বৃদ্ধি করা হয়েছে।

বাজেটে করছাড়ের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আইনটিকে সহজ করে করদাতাদের স্বস্তি দেয়া গেলে রাজস্ব আদায় আরো বাড়বে। আইনটিকে আমরা সহজ করব। আমরা মনে-প্রাণে বিশ্বাস করি যদি আমরা আইনটিকে সহজ করতে পারি,ট্যাক্স পেয়ারদের যদি এই কাজে সম্পৃক্ত করতে পারি, তাহলে রেভিনিউ জেনারেশন অনেক বৃদ্ধি পাবে। রেভিনিউ জেনারেশন বাড়াতে পৃথিবীর অনেক দেশ চেষ্টা করেছিল। এমনকি আমেরিকায়ও কোনো একসময় ৭৫ শতাংশ ট্যাক্সের পরিমাণ ছিল, সেটা এখন নেই। বেশি করে ট্যাক্স আদায় করা যায় কি না সেটি সবাই চেষ্টা করেছিল।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ব্যবসায়ীরা বলছে ব্যবসায়বান্ধব বাজেট করার কথা। ব্যবসায়ী শব্দটি ফ্লেক্সিবল জব, এটাকে ফিক্সড করে রাখা যাবে না। প্রত্যেক সময় মানুষের চাহিদার পরিবর্তন হয়। চাহিদা পূরণে ব্যবসায়ীদেরও পরিবর্তন আসে। তাদের সামনে এগিয়ে যাওয়ার জন্যও পরিবর্তন আসে। সুতরাং এটা কখনো ফিক্স রাখা যাবে না। আমাদের সিচুয়েশন কী ডিমান্ড করে, সারা বিশ্ব কী করছে, সেটি দেখতে হবে। উন্নত বিশ্ব যদি পিছিয়ে পড়ে, তাহলে আমরা কিন্তু এগুতে পারব না। কারণ উন্নত বিশ্বের মাধ্যমে কিন্তু আমরা সমৃদ্ধ। আজকে মার্কিন ইকোনমি এটাই আমাদের শেখায়, আমরা একে অপরের সাথে সম্পৃক্ত।

অনলাইন ব্রিফিংয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, রাজস্ব আয় বাড়াতে কলোটাকা সাদা করার সুযোগ দেয়া হয়েছে। করোনার মধ্যেও দেশের অর্থনীতি উন্নতির দিকেই আছে। ফলে, ৭ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জনের কোনো শঙ্কা নেই

এ সময় কৃষি মন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, প্রস্তাবিত বাজেট নতুন বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান ও জীবিকা নিশ্চিত করবে। সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক আরো বলেন, স্বাস্থ্যখাতের বরাদ্দের কোনো ঘাটতি নেই। তবে অর্থব্যয়ের ক্ষেত্রে যে সমস্যা তৈরি হচ্ছে তা সমন্বিতভাবে সমাধান করা হবে বলেও জানান তিনি। তিনি বলেন, প্রয়োজনে যে কোনো খাত থেকে টাকা নিয়ে এই খাতে (স্বাস্থ্য) দেয়া যাবে। অর্থের কোনো সমস্যা নাই।

এ সময় অর্থসচিব আবদুর রউফ তালুকদার জানান, করোনা টিকায় প্রয়োজনে বরাদ্দ আরো বাড়ানো হবে। অর্থমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সক্ষমতা বেড়েছে। এখন ঋণ নেয়ার নয়, দেয়ার সময় এসেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

মহামারির মধ্যে তার এ বাজেটে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জন্য মোট বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৩২ হাজার ৭৩১ কোটি টাকা, যা মোট বাজেটের ৫ দশমিক ৪ শতাংশ। পাশাপাশি মহামারিকালে জরুরি প্রয়োজন মেটাতে ১০ হাজার কোটি টাকা থোক বরাদ্দের প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী।

অর্থমন্ত্রী বলেন, বাজেটে স্বাস্থ্য খাতের বরাদ্দ যাই থাক, প্রয়োজনে অর্থের যোগান দিতে কোনো সমস্যা হবে না।

#তমহ/বিবি/০৫-০৬-২০২১

ক্যাটেগরী: অর্থনীতি

ট্যাগ: অর্থনীতি

অর্থনীতি ডেস্ক, বিবি শনি, জুন ৫, ২০২১ ৮:২৩ পূর্বাহ্ন

Comments (Total 0)