কাঁদো বাঙালি কাঁদো...

কাঁদো বাঙালি কাঁদো...

আজ ১৫ আগস্ট। ৪৭ বছর আগে ১৯৭৫ সালের আজকের এই দিনে দেশি-বিদেশি চক্রান্তে সপরিবারে ইতিহাসের জঘন্যতম হত্যাকাণ্ডের শিকার হন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বাঙালি জাতিসত্ত্বার চেতনায় সাড়ে সাত কোটি মানুষকে জাগ্রত করেছেন মৃত্যুঞ্জয়ী বঙ্গবন্ধু। মাত্র ৫৫ বছরের জীবনে বাংলার মাটি আর মানুষকে ভালোবাসার যে বন্ধনে বেঁধেছেন তা কোনো দিন ছিন্ন হওয়ার নয়। শোকের এই দিনে গোটা বাঙালি জাতি তাদের মহান নেতাকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছে।

বাংলাদেশের মানুষের ওপর ছিল তার অগাধ আস্থা। তাই গোয়েন্দা সংস্থা ও বিভিন্ন মহল থেকে সতর্ক করার পরও বঙ্গভবনে থাকেননি। সাধারন মধ্যবিত্ত বাঙালির মতো থেকেছেন ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরের বাড়িতে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কখনো ভাবেননি কোনো বাঙালি তাকে হত্যা করতে পারে।
দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রে স্বাধীনতাবিরোধী ঘাতকচক্র যেভাবে বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সবাইকে হত্যা করে- তা পৃথিবীতে বিরল। মার্টিন লুথার কিং, আব্রাহাম লিংকন, প্যাট্রিক লুমুম্বা, জন এফ কেনেডি, মহাত্মাগান্ধী, ইন্দিরাগান্ধীর মতো নেতারা রাজনৈতিক হত্যার শিকার হয়েছেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর মতো সপরিবারে হত্যা করা হয়নি কাউকেই।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাতে সেনাবাহিনীর কিছুসংখ্যক বিপথগামী সদস্য ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাসভবনে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবার হত্যা করে। বঙ্গবন্ধু ছাড়াও সেই রাতে তাঁর সহধর্মিণী বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, তিন ছেলে শেখ কামাল, শেখ জামাল ও শিশুপুত্র শেখ রাসেল, পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজী জামাল, বঙ্গবন্ধুর একমাত্র ভাই শেখ আবু নাসের, বঙ্গবন্ধুর ফোন পেয়ে তার জীবন বাঁচাতে ছুটে আসা কর্নেল জামিলউদ্দিন আহমেদ, এসবির কর্মকর্তা সিদ্দিকুর রহমান ও সেনাসদস্য সৈয়দ মাহবুবুল হককে হত্যা করা হয়।

ওই কালরাতেই বিপথগামী সেনাসদস্যদের আরেকটি দল বঙ্গবন্ধুর ভাগনে যুবলীগের নেতা শেখ ফজলুল হক মনির বাসায় হামলা চালিয়ে তাকে এবং তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আরজু মনিকে হত্যা করে। এ ছাড়া বঙ্গবন্ধুর ভগ্নিপতি আবদুর রব সেরনিয়াবাত ও তার কন্যা বেবি, পুত্র আরিফ সেরনিয়াবাত, নাতি সুকান্ত বাবু, সেরনিয়াবাতের বড় ভাইয়ের ছেলে সজীব সেরনিয়াবাত এবং এক আত্মীয় আবদুল নঈম খানকেও হত্যা করা হয়।


সেই কালরাতে ঘাতকরা বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণী শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, ছেলে শেখ কামাল, জামালসহ ২২ জনকে নির্মমভাবে হত্যা করে। ঘাতকদের বুলেট থেকে রেহাই পায়নি শেখ রাসেলের মতো ছোট্ট শিশুও। ওই সময় বঙ্গবন্ধুর দুই মেয়ে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা বেলজিয়ামের ব্রাসেলসে অবস্থান করায় বেঁচে যান।

হানাদার পাকিস্তানি বাহিনী যে কাজটি করার দুঃসাহস করেনি, সেটিই করেছে এদেশের কিছু নরপশু। স্বাধীনতাবিরোধী দেশি-বিদেশি চক্রের ষড়যন্ত্রের শিকার হতে হয়েছে স্বাধীনতার মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে।

#তমহ/বিবি/১৫-০৮-২০২২

ক্যাটেগরী: জাতীয়

ট্যাগ: জাতীয়

জাতীয় ডেস্ক, বিবি সোম, আগষ্ট ১৫, ২০২২ ১২:২৯ পূর্বাহ্ন

Comments (Total 0)