ফ্যাশনের নামে কী হচ্ছে?

ফ্যাশনের নামে কী হচ্ছে?

ইয়াহিয়া মির্জা

বেলবটম প্যান্ট, বুকখোলা শার্ট ও ঘাড় পর্যন্ত লম্বা চুল। সত্তর-আশির দশকে তরুণদের মধ্যে জনপ্রিয় ছিলো এই ফ্যাশন। তখনকার সিনেমাগুলোতে নায়কদের এভাবে দেখা যায়। নব্বইয়ের দশকে চিপা জিন্সপ্যান্ট, লেদার জ্যাকেট ও রাহুল কাট চুল অনেক জনপ্রিয় ছিলো। নতুন শতাব্দীর শুরুর দশকে ঠোঁটে-ভ্রুতে ফুটো করে অলঙ্কার পরার বিষয়টি অনেকের মধ্যেই দেখেছি। পরে আসে শরীরে ট্যাট্টু আঁকার ফ্যাশন। আর গত কয়েক বছরে জনপ্রিয়তা পেয়েছে চুলে রং করার বিষয়টি।

মুরুব্বি বয়সী যারা, তারা কিন্তু গ্রহণ করতে পারে না উপরোক্ত ফ্যাশনগুলো। কিশোর ও তরুণদের কাছে যা ভালো, সমাজের সবার কাছে তা গ্রহণযোগ্য হয় না কখনোই। বয়সের পার্থক্যের কারণে আসলে রুচিরও পরিবর্তন ঘটে। কম বয়সে দুরন্ত একটা ভাব থাকে সবকিছুতে। কিন্তু বয়স বাড়লে ধীরস্থির হয়ে যায় মানুষ। তখন পোশাকে-আশাকে, চলাফেরায়ও তার প্রভাব পড়ে। বয়স্কদের কাছে যুবকদের অনেক কিছুই উশৃঙ্খল মনে হতে পারে।

মুরুব্বিদের এই অবস্থান একেবারে উড়িয়ে দেয়া ঠিক নয়। একটু চিন্তা করলেই বুঝা যায়, তাদের কথার মূল্য অনেক। কারাগারে বসে টিকটক অপু ও ডাক্তার সাবরিনার এই উপলব্ধি হবে আমি আশা রাখি। এই কথায় অনেকেই মনে করতে পারে, আমি তরুণদের ফ্যাশনের বিরুদ্ধে। নারীদের স্বাধীনভাবে কিছু করার বিরুদ্ধে। আসলে তা নয়।

আমার মত হচ্ছে, যে বয়সে যে ফ্যাশন সেটা করা দোষ নয়। কিন্তু তার মর্যাদা দিতে হবে। চুলে রং করবো ঠিক আছে। কিন্তু আমি উশৃঙ্খল আচরণ কেন করবো? আবার আমার ভালোলাগে এমন পোশাক পরবো, ছবি তুলবো- এটা ঠিক আছে। কিন্তু সব ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় উন্মুক্ত করে দিবো কেন?

এই যে গ্রেপ্তারের পর সোশ্যাল মিডিয়ায় থাকা ডাক্তার সাবরিনার ছবিগুলোর অপব্যবহার হচ্ছে, এ ধরনের কাজ যারা করছে, তারা অবশ্যই নিন্দনীয় কাজ করছে। কিন্তু এভাবে অবাধে ছবি ব্যবহারের সুযোগ পেতো না, ফেসবুকে ছবি আপ করার ক্ষেত্রে তিনি সচেতন থাকলে। আরও একটা বিষয় দেখতে হবে, তিনি একটা অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়ার পর তার নানা কিছুর সমালোচনা হচ্ছে। তার মানে এমনিতে যা স্বাভাবিকভাবে গ্রহণীয়, অভিযুক্ত হয়ে গেলে অন্য সবকিছু নিয়েও কথা ওঠে।

এদিকে টিকটক অপুর চুলের রং নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিজ্ঞ আদালত। এই কারণে ফ্যাশন যিনি করবেন, তাকে অবশ্যই উশৃঙ্খল আচরণ থেকে দূরে থাকতে হবে। আর সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের ব্যক্তিগত তথ্য বা ছবি কতটুকু সবার জন্য উন্মুক্ত রাখবো এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। আশা রাখি, বর্তমানে আলোচিত-সমালোচিত সব বিষয় থেকে আমরা শিক্ষা নিবো।

লেখক: হেড অব পাবলিক রিলেশনস অ্যান্ড মিডিয়া ডিভিশন, সিটি ব্যাংক

#এসকেএস/বিবি/০৮-০৮-২০২০

ক্যাটেগরী: মত

ট্যাগ: মত

মত ডেস্ক, বিবি শনি, আগষ্ট ৮, ২০২০ ৫:২৩ পূর্বাহ্ন

Comments (Total 0)