সমন্বয়কদের ‘রাজনৈতিক দল’ হবে কী?
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রাজনৈতিক প্লাটফর্ম জাতীয় নাগরিক কমিটি গঠন করেছে। জেলায় জেলায় মতবিনিময় সভা করছেন সমন্বয়করা। এসব কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে তারা রাজনৈতিক দল গড়তে যাচ্ছেন, মিলছে সেই আভাষ। সেই দলে উপদেষ্টারা কী যোগ দেবেন? সাংবাদিক খালেদ মুহিউদ্দীনের এমন প্রশ্নে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘কেউ যদি সেই দলের দর্শনের সঙ্গে নিজেকে একাত্ম্য মনে করেন, তবে যোগদান করতেই পারেন। তবে রাজনৈতিক দল করে আমার রাজনীতি করার ইচ্ছে নেই। আমি অধিকারভিত্তিক রাজনীতিটাই করে যেতে চাই।’
‘ঠিকানায় খালেদ মুহিউদ্দীন’ টকশোতে কথা বলছিলেন সরকারের পানি সম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি ছাড়াও যেখানে অতিথি ছিলেন অধ্যাপক, লেখক ও বুদ্ধিজীবী আনু মুহাম্মদ। এই আলোচনা অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন ঠিকানা টিভির প্রধান সম্পাদক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) খালেদ মুহিউদ্দীন। ১২ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় রাত ১০টায় অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচারিত হয় ‘ঠিকানায় খালেদ মুহিউদ্দীন’ ইউটিউব চ্যানেলে।
প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি জনসাধারণের আস্থা নেই, সেই দিকটি তুলে ধরেন অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। তিনি বলেন, ‘বিগত আওয়ামী লীগ সরকার এতো জুলুম করেছে, স্বৈরতন্ত্র কায়েম করেছে, এতো লুটপাট করেছে- তারপরও বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বে জনগণ জমায়েত হয়নি। কারণ তাদের হাতে বিকল্প ছিল না। তারা মনে করেছে, আবার তো একই জিনিস আসবে।’
বিভিন্ন ক্ষেত্রে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সরকার আওয়ামী লীগ বিরোধীদের নিয়োগ দিচ্ছে কি না, বিএনপি-জামায়াতের এজেন্ডাই বাস্তবায়ন করছে, এমনটা মনে হতে পারে কি না- আনু মুহাম্মদের কাছে জানতে চান খালেদ মুহিউদ্দীন। নিয়োগের ক্ষেত্রে যোগ্যতাই মাপকাঠি হওয়া উচিত দলীয় পরিচয় নয়, মনে করেন আনু মুহাম্মদ। তবে বর্তমান পরিস্থিতির জন্য আওয়ামী লীগ নিজেই দায়ী, সেই ইঙ্গিত দেন এই লেখক ও বুদ্ধিজীবী। তিনি আরো যোগ করেন, এবারের জুলাই থেকে আগস্ট- এই সময়ে আওয়ামী লীগ যেভাবে হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে, যেভাবে নির্মমতা দেখিয়েছি, তাতে মানুষের মধ্যে আওয়ামী লীগের নেতাদের প্রতি যে আক্রোশ, তা অস্বাভাবিক না। তবে গণপিটুনি গ্রহণযোগ্য নয়। রাজশাহীতে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা, যার একটি পা ছিল না, তাকে মেরে ফেলা হলো, এটা গ্রহণযোগ্য নয়।
অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ মনে করেন, মামলা, হামলা, গ্রেপ্তার যেভাবে হচ্ছে, তা না করে প্রকৃত অপরাধীদের আলাদা করে সুনির্দিষ্ট করতে হবে। তা না করা হলে সবই হালকা হয়ে যাবে, প্রকৃত অপরাধীরা আড়াল হয়ে যাবে।
তবে গণহারে মামলা, গণপিটুনি- এসব ঘটনায় সরকারের সায় নেই, দাবি করছেন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি বলছেন, মামলায় এমন কিছু নাম জড়ানো হচ্ছে, যা গ্রহণযোগ্য নয়। এগুলো কিন্তু সরকার করছে না। যারা করছে, তাদের সরকার নিবৃত্ও করতে পারছে না। কোনো মব অ্যাটাকেও সরকারের কেউ জড়িত নয়। সরকারের কোনো পৃষ্ঠপোষকতা নেই এসবে। তবে থামানোর ক্ষেত্রে নিবর্তনমূলকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া না হলেও অন্য যতভাবে বলা যায় ততভাবেই বলছে সরকার।
বর্তমান সরকার সবাইকে গ্রহণ করে, আওয়ামী লীগকে বাদ দিয়ে সবকিছু করছে- এমন পরিস্থিতি সম্পর্কে সৈয়দা রিজওয়ানা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ যে ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছিল, সেই পথে হাঁটবে না অন্তর্বর্তী সরকার। এই সরকারের এজেন্ডা হচ্ছে ফ্যাসিবাদ নির্মূল করে, ফ্যাসিস্টদের বিচার করে, দেশে প্রকৃত গণতন্ত্র আনা। এক মাস আগে এতোগুলো তাজা প্রাণ ঝরে গেছে, এতো রক্ত আমরা দেখেছি- এই রক্তের যারা সুবিধাভোগী, বিচার না করে তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসার কোনো সুযোগ আছে?’ খালেদ মুহিউদ্দীনের কাছে পাল্টা প্রশ্ন রাখেন তিনি।
Share with others:
Recent Posts
Recently published articles!
-
ব্যাংক ডেস্ক, বিবি
-
শেয়ারবাজার ডেস্ক, বিবি
-
অর্থনীতি ডেস্ক, বিবি
-
শেয়ারবাজার ডেস্ক, বিবি
-
জাতীয় ডেস্ক, বিবি