শিরোপাজয়ী খুলনা

শিরোপাজয়ী খুলনা

বঙ্গবন্ধু টি টোয়েন্টি কাপের ফাইনালে গাজী গ্রুপ চট্টগ্রামকে পাঁচ রানে হারিয়ে শিরোপা জিতে নিয়েছে জেমকন খুলনা। ১৮ ডিসেম্বর শুক্রবার মিরপুর শের ই বাংলা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত টুর্নামেন্টের ফাইনালে মাহমুদউল্লাহদের ছুড়ে দেয়া ১৫৬ রানের জবাবে ১৫০ রানেই থামে চট্টগ্রামের ইনিংস।
ব্যক্তিগত কারণে ফাইনালে ছিলেন না দলের বড় তারকা সাকিব আল হাসান। বোলিংয়ে অফ ফর্মে ছিলেন দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ বোলার মাশরাফি বিন মর্তুজা। কিন্তু অধিনায়কোচিত ইনিংস খেলে খুলনাকে পথ দেখালেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। পরে বল হাতে অধিনায়কের আস্থার প্রতিদান দিলেন শুভাগত হোম, আল আমিন হোসেন, হাসান মাহমুদ ও শহিদুল ইসলামরা। আর তাতেই জয় ছিনিয়ে নিল খুলনা।
অন্যদিকে টুর্নামেন্টের শুরু থেকেই সেরা ফর্মে থাকা চট্টগ্রামের শেষটা আশানুরূপ হলো না। অথচ গ্রুপ পর্বে এই দলটিই ৮ ম্যাচের ৭টিতে জিতে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে ছিল। এমনকি টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রান ও উইকেটের মালিকও চট্টগ্রামেরই। কিন্তু ৬ পয়েন্ট কম নিয়ে গ্রুপ পর্বে দ্বিতীয় স্থানে থাকা খুলনাই শেষে এসে বাজিমাত করে দিল।
লক্ষ্য তাড়ায় নেমে দেখেশুনে খেলার পথ ধরেন চট্টগ্রামের দুই ওপেনার লিটন দাস ও সৌম্য সরকার। তবে তাদের জুটি দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। দলকে ২৬ রানে রেখে শুভাগত হোমের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন সৌম্য (১২)। এর আগে ব্যক্তিগত ১০ রানের মাথায় অবশ্য ইমরুল কায়েসের বদান্যতায় একবার ক্যাচ তুলেও জীবন পেয়েছিলেন এই বাঁহাতি।
উদ্বোধনী জুটি ভাঙার পর ৭ রান করে বিদায় নেন চট্টগ্রামের অধিনায়ক মোহাম্মদ মিঠুন। দলের ফিফটি পার হওয়ার পর রা আউটের শিকার হন লিটন দাস (২৩)। তবে অন্যপ্রান্তে সৈকত আলী ততক্ষণে সেট হয়ে গেছেন। প্রথমে শামসুর রহমানকে (২৩) নিয়ে ৪৫ রানের জুটি গড়েন তিনি। এরপর মোসাদ্দেককে সঙ্গে নিয়ে ছুটতে থাকেন এই তরুণ। ৪১ বলে ফিফটিও তুলে নেন।
ক্রমেই আগ্রাসী হয়ে ওঠা সৈকত ও মোসাদ্দেক ১৮ ও ১৯তম ওভারে শেষ দুই ওভারে তোলেন ২৪ রান। শেষ ওভারে জেতার জন্য চট্টগ্রামের দরকার ছিল ১৬ রান। প্রথম দুই বলে আসে ৩ রান। তৃতীয় বলে শহিদুলের ফুলটসে টাইমিংয়ে গরমিল করে লং অনে ক্যাচ তুলে দেন মোসাদ্দেক। পরের বলে বিদায় নেন চট্টগ্রামের শেষ ভরসা সৈকতও (৪৫ বলে ৫৩ রান)। শেষ বলে অবশ্য ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন নাহিদুল। কিন্তু ততক্ষণে দেরি হয়ে গেছে।
বল হাতে ২ উইকেট তুলে নিয়েছেন খুলনার শহিদুল। ১টি করে উইকেট ঝুলিতে পুরেছেন শুভাগত, আল আমিন ও হাসান। এর মধ্যে আল আমিন ৪ ওভার বল করে খরচ করেছেন মাত্র ১৯ রান। আর শুভাগত ২ ওভারে খরচ করেছেন মাত্র ৮ রান। কিন্তু দলের অন্যতম বড় ভরসা মাশরাফি ৪ ওভারে ৪০ রান খরচে ছিলেন উইকেটশূন্য।
এর আগে শুরুতে ব্যাট করতে নেমে অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ৭০ রানের দুর্দান্ত ইনিংসে ভর করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৫৫ রান করে জেমকন খুলনা। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের প্রথম বলেই জহরুল ইসলাম অমির উইকেট হারায় খুলনা। জাকির হাসান (২৫) ও ইমরুল কায়েসও (৮) খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি। তবে সেখান থেকেই আরিফুল হক ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ দলের রানের চাকা সচল রাখতে সচেষ্ট হন। যদিও আরিফুল (২১) ইনিংস দীর্ঘ করতে পারেননি।
শেষদিকে মাহমুদউল্লাহ ব্যাট চালিয়ে রান তোলার চেষ্টা করেন। তবে অন্যপ্রান্তের ব্যাটসম্যানরা যোগ্য সঙ্গ দিতে পারেননি। শুভাগত হোম (১৫), শামিম হোসেন (০), মাশরাফি বিন মর্তুজা (৫) ব্যর্থ হলে অল্প রানেই থামার শঙ্কা ভর করে খুলনা শিবিরে। তবে ওই অবস্থায়ও ৩৯ বলে অর্ধশতক তুলে নেন মাহমুদউল্লাহ। শেষ পর্যন্ত রিয়াদ ৪৮ বলে ৭০ রান করে অপরাজিত থাকেন, যেখানে ছিল ৮টি চার ও ২টি ছক্কার মার। এটি আবার তার ক্যারিয়ার সেরা টি টোয়েন্টি ইনিংসও।
চট্টগ্রামের নাহিদুল ইসলাম ও শরিফুল ইসলাম ২টি, মোসাদ্দেক হোসেন ও মোস্তাফিজুর রহমান ১টি করে উইকেট নেন। ম্যাচ সেরা নির্বাচিত হয়েছেন খুলনার মাহমুদউল্লাহ।
#তমহ/বিবি/১৮ ১২ ২০২০


খেলা ডেস্ক, বিবি
Published at: বৃহঃ, ডিসেম্বর ১৭, ২০২০ ৮:৫৯ অপরাহ্ন
Category: খেলা
Share with others:
ad

Recent Posts

Recently published articles!